হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত রুখতে এ বার কৃত্রিম মেধা পরিচালিত সিসি ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হচ্ছে বক্সার জঙ্গলে। বন দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ২০টি জায়গায় বসানো হবে ওই সিসি ক্যামেরা। একই সঙ্গে কুঞ্জনগরে হাতির হানায় তিন জনের মৃত্যুর পরে বক্সার জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়গুলিতে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক দিনে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ‘কুইক রেসপন্স টিমের’ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি করা হয়েছে।
জঙ্গল ঘেরা আলিপুরদুয়ারে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে মানুষের সংঘাত নতুন নয়। বন দফতরের হিসাব অনুযায়ী, বক্সায় বর্তমানে অন্তত ১৭৫টির বেশি হাতি রয়েছে। সেই হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে যাওয়ার আগেই বনকর্মীরা যাতে সজাগ হতে পারেন, সে জন্যই এ বার এআই যুক্ত সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত বনকর্তাদের। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ ক্ষেত্র অধিকর্তা (পূর্ব) দেবেশিস শর্মা বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিভিন্ন করিডরে আপাতত কুড়িটি এআই যুক্ত সি সি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে।” যার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই রাজ্যে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি।
বনকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যামেরাগুলি করিডর দিয়ে যাতায়াত করা হাতিকেই শুধুমাত্র চিহ্নিত করবে। এবং কোনও একটি বা একাধিক হাতি লোকালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে বক্সার সদর দফতরের কন্ট্রোল রুমে, বনকর্তাদের মোবাইল ফোনেও বার্তা পাঠাবে। সঙ্গে-সঙ্গে কন্ট্রোল রুম থেকে স্থানীয় এলাকায় টহলের দায়িত্বে থাকা বনকর্মীদের সজাগ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সেই হাতিকে আগে আর কোন-কোন এলাকায় দেখা গিয়েছে, সেই তথ্যও পেতে থাকবেন বনকর্তারা। যাতে হাতিটির গতিবিধিও বুঝতে পারবেন তাঁরা।
এ দিকে, মানুষ-বন্যপ্রাণীর সংঘাত রুখতে মঙ্গলবার কালচিনি ব্লকের বিশ্বনাথ পাড়ায় হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের যৌথ বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা (পশ্চিম) হরিকৃষ্ণণ পিজে-সহ অন্য বন কর্তারা। বন্যপ্রাণীর গতিবিধি নজরে রাখতে এবং মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘাত রুখতে হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের গোদামডাবরি, ভুটরি-সহ চারটি বিটে নতুন চারটি গাড়ি দেওয়া হয়েছে দফতরের তরফে। রাতে নিরাপত্তার জন্য বন কর্তাদের কাছে সোলার বাতির দাবি জানান উত্তর লতাবাড়ি যৌথ বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা।