• বনসৃজনেও সিঁদুর, ফিরবে হারানো গাছ
    আনন্দবাজার | ১১ জুন ২০২৫
  • বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেখা গিয়েছে দিল্লির বাসভবন চত্বরে সিঁদুর গাছের চারা রোপণ করছেন। এ বারে জেলার বনসৃজন প্রকল্পেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে সেই সিঁদুর গাছ। পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎপাদিত বীজ থেকে চারা তৈরির কাজ শুরু করেছে পুরুলিয়ার কংসাবতী (দক্ষিণ) বনবিভাগ। বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো বলেন, “যমুনা রেঞ্জের কুইলাপাল, কেন্দার নার্সারি-সহ আরও কয়েকটি নার্সারিতে বীজ থেকে সিঁদুর গাছের চারা তৈরি হচ্ছে।”

    পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে প্রত্যাঘাত হেনেছে ভারত। তার পরেই যেন অন্য তাৎপর্য পেয়েছে ‘সিঁদুর’ শব্দটি। যদিও সাম্প্রতিক ঘটনাবলির সঙ্গে সিঁদুর সৃজনের যোগ নেই বলেই জানাচ্ছেন ডিএফও। তিনি বলেন,”বনাঞ্চলে বিরল গাছ সংরক্ষণ করা যেমন প্রয়োজন, তেমন হারিয়ে যাওয়া গাছগুলিকে বনসৃজনের মাধ্যমে তুলে আনা দরকার। তাই সিঁদুর-সহ আরও কিছু হারিয়ে যাওয়া গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” বন দফতর সূত্রের খবর, ইন-সিটু ও এক্স-সিটু—এই দুই পর্যায়ে বনাঞ্চলে গাছ সংরক্ষণ ও হারিয়ে যাওয়া গাছ লাগানোর কাজ করা হচ্ছে।

    এই প্রেক্ষিতে সিঁদুরের বিশেষ বিকল্প নেই বলেই জানাচ্ছে বন দফতর ও বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের মতে, সিঁদুর খরা সহনশীল ও মাঝারি আকারের বৃক্ষ জাতীয় গাছ। আদতে মধ্য ও লাতিন আমেরিকার উদ্ভিদ হলেও ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে এই গাছ স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠে। এই গাছ অত্যন্ত অর্থকরী জানিয়ে ডিএফও বলেন, ”ছোট বেলায় দেখেছি, অনেক সিঁদুর গাছ ছিল এলাকায়। বনরক্ষা কর্মী হিসেবে হারিয়ে যাওয়া এই গাছকে ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” তিনি আরও জানান, আপাতত নার্সারিতে চারাগুলি লাগানো হবে। পরে সেই গাছ থেকে পাওয়া বীজ থেকে ফের চারা তৈরি করা বনভূমিতে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    শুধু কংসাবতী (দক্ষিণ) বিভাগ নয়, সিঁদুর গাছ লাগাতে উৎসাহী কংসাবতী (উত্তর) বনবিভাগের রঘুনাথপুর রেঞ্জও। সেখানকার রেঞ্জ অফিসার নীলাদ্রি সখা বলেন, “দফতর চাইছে হারিয়ে যাওয়া গাছগুলিতে ফের নতুন ভাবে সামনে আনতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। গাছের বীজ চেয়েছি। বর্ষার আগেই বীজ পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে।”

    বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষক সুব্রত রাহা জানান, এর আগে কেন্দ্রের একটা প্রকল্পে সিঁদুরের চারা তৈরি করা হয়েছিল। সেই চারা নিয়েছিল বন দফতরের বাঘমুণ্ডি রেঞ্জ।

    সুব্রত বলেন, “আর্থিক কারণে এ বারে চারা তৈরি করা যাচ্ছে না। বীজই তৈরি করা হচ্ছে। আপাতত চার হাজার বীজ কংসাবতী (দক্ষিণ) বনবিভাগ নিয়েছে। সহায়তা পেলে আশা করছি আরও দশ হাজার বীজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তৈরি করা সম্ভব হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)