সংবাদদাতা, মানিকচক: জরুরি পরিষেবায় গাফিলতি! নাকি অন্য কোনও রহস্য? ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে শরীরকে তৈরি করতে শিশুদের কিছু ভ্যাকসিন দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সিরিঞ্জ নেই এই অজুহাতে মায়েদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাব সেন্টার থেকে। স্বাস্থ্যকর্মীরা মায়েদের সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন,সিরিঞ্জ নেই। কিনে আনলে বাচ্চাকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেব। মানিকচকের মথুরাপুর রায়পাড়ার সাব সেন্টারে বুধবার ভ্যাকসিন না পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন অভিভাবকরা। অভিযোগ শুনে আকাশ থেকে পড়লেন মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভীক শঙ্কর কুমার। তিনি বলছেন, মানিকচকে সিরিঞ্জের অভাব নেই। যদি কখনও কোথাও সিরিঞ্জ ফুরিয়ে যায়, তাহলে স্বাস্থ্যকর্মীদের বলা আছে তাঁরা যেন কিনে ভ্যাকসিন দেন। তারপরেও স্বাস্থ্যকর্মীরা কেন সিরিঞ্জ না থাকার অজুহাত দিয়েছেন, বুঝতে পারছি না। তদন্তে গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতি সপ্তাহে বুধ ও বৃহস্পতিবার মানিকচক ব্লকের প্রায় ৫০টি সাব সেন্টারে শিশুদের বয়স অনুযায়ী পোলিও ও অন্যান্য ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ব্লকের অন্য কোথাও সমস্যা না হলেও গত একমাস সিরিঞ্জ সরবরাহের অভাবে ভ্যাকসিন না পেয়ে সমস্যায় মথুরাপুর রায়পাড়া ও ফত্তেনগরের অভিভাবকরা।
রায়পাড়ায় সাব সেন্টারে এদিন এলাকার শিশুদের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হয়। সেন্টারে আসার জন্য এলাকার মায়েদের আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেইমতো এদিন সন্তানদের নিয়ে হাজির হন অভিভাবকরা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর আশাকর্মীরা তাঁদের জানান, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ না থাকার জন্য ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। সেকথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাব সেন্টারে থাকা অভিভাবক এবং মায়েরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। গত মাসেও সিরিঞ্জের অভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। গতবার তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এবারও একই পরিস্থিতি হওয়ায় এদিন ক্ষোভের মুখে পড়েন আশাকর্মী মীরা মণ্ডল। তাঁর কথায়,আমাদের সিরিঞ্জ দেওয়া হয়নি। তাহলে আমরা কীভাবে ভ্যাকসিন দেব। সেজন্য অভিভাবকদের সিরিঞ্জ কিনে আনতে বলেছিলাম।
ভ্যাকসিন না নিলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে আশঙ্কা করে আশাকর্মীদের কথামতো কয়েকজন অভিভাবক সিরিঞ্জ কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটি তাঁরা দোকানে পাননি। ফলে ভ্যাকসিন না নিয়েই ফিরতে হয়েছে। অভিভাবক সনাতন কুণ্ডু, সুমি মণ্ডলদের কথায়, বারবার ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে আমাদের সেন্টারে আসতে বলা হচ্ছে। অথচ সিরিঞ্জ না থাকার অজুহাত দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দপ্তরের সিরিঞ্জ দেওয়ার কথা, সেটা আমাদের বাজার থেকে কেন কিনে আনতে বলা হচ্ছে? মনে হচ্ছে এর মধ্যে কোনও রহস্য আছে। নিজস্ব চিত্র