• পড়শি কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের পর দেহ লোপাট, ফাঁসির সাজা
    বর্তমান | ১২ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মেয়ের বয়সি পড়শি কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের পর দেহ লোপাট। এক বছর নয় মাস আগে ঘটে যাওয়া ধূপগুড়ির ওই ভয়াবহ ঘটনায় দোষীর ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিণ্টু শূর সাজা শোনান। সাজাপ্রাপ্তর নাম হরিপদ রায়। মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী দেবাশিস দত্ত বলেন, নিজের মেয়ের বয়সি প্রতিবেশী এক কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের পর তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিয়ে এসেছিল অভিযুক্ত। ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম, নিষ্ঠুর ও বিরলতম বলে সাজা ঘোষণার সময় উল্লেখ করেছেন বিচারক। 

    এদিকে, মেয়ের খুনির ফাঁসির সাজা হওয়ায় খুশি নিহত কিশোরীর বাবা-মা। আদালত চত্বরে এদিন চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা। কিশোরীর বাবা বলেন, পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে যে আমার মেয়েকে খুন করেছে, তার চরম শাস্তি চেয়েছিলাম। দোষীর ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আমরা খুশি। 

    জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার খণ্ডবাহলে উমেশ গণপত বলেন, ওই মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে কম সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিস, যা দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়ায় সাহায্য করেছে। 

    নিহত কিশোরীর বাড়ি ধূপগুড়ির গদেয়ারকুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। ওইদিন স্থানীয় পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন ছিল। ফলে এলাকার বেশিরভাগ পুরুষ সেখানে ছিল। ১১ বছরের ওই কিশোরী দুপুরে বাড়ির সামনে কয়েকজনের সঙ্গে খেলছিল। আচমকা সে উধাও হয়ে যায়। অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। না পেয়ে সন্ধ্যায় ধূপগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।

    মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, খেলতে খেলতে পাশেই অভিযুক্তের বাড়িতে যায় কিশোরী। সেসময় ঘরে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে হরিপদ রায়। পরে শ্বাসরোধ করে মেয়েটিকে খুন করে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ বস্তায় ভরে সাইকেলে চাপিয়ে অনেকটা দূরে নিয়ে গিয়ে সেতুর উপর থেকে ডুডুয়া নদীতে ফেলে দেয়। যখন বস্তায় মোড়া দেহ নিয়ে যাচ্ছিল, সেসময় কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের চোখে পড়ে বিষয়টি। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলে জানিয়েছিল, মেয়েদের নিয়ে তার স্ত্রী বাপেরবাড়ি গিয়েছে। বস্তায় ভরে তাদের জামাকাপড় নিয়ে যাচ্ছে। 

    যদিও এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পরে সবটাই ধরা পড়ে। যাদের সঙ্গে কিশোরী খেলছিল তারাও পুলিসকে জানায়, মেয়েটিকে হরিপদের বাড়ির দিকে যেতে দেখেছে তারা। সেসময় কিশোরীর হাতে জলের বোতল ছিল। তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তের ঘরের খাটের নীচ থেকে বোতলটি উদ্ধার করে পুলিস। নাবালিকার বাবা-মা সহ মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষ্য দেন। মঙ্গলবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এদিন তার ফাঁসির সাজা শোনান বিচারক। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)