মুঙ্গের থেকে শহরে ঢুকছে ‘দেশি কাট্টা’, ছ’মাসে ১৫ জন গ্রেপ্তার
বর্তমান | ১২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বিহারের মুঙ্গের থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে শহর শিলিগুড়িতে। ‘দেশি কাট্টা’ নামে পরিচিত এই আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচার চক্র তৈরি হয়েছে শহরে। মোটা টাকার বিনিময়ে তারা পুরো ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। একাধিক অভিযানে বন্দুক ক্রেতা-বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করলেও চক্রের পাণ্ডাদের নাগাল পায়নি পুলিস। ছ’মাসে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান করে ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। গ্রেপ্তার করেছে ১৫ জনকে। সেই পাণ্ডাদের ধরতে বিহার এবং অন্যান্য জায়গা থেকে যে আগ্নেয়াস্ত্র আসছে তার রুট চিহ্নিত করে লাগাতার নজরদারি বাড়াচ্ছেন শহরের শীর্ষ পুলিস আধিকারিকরা। কোনওভাবেই শহরে এই চক্রকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না বলে তৎপর পুলিস। এমনকি, বিহারে গিয়ে অভিযান চালিয়েও একাধিক বৈআইনি অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা লাগাতার অভিযান চালাচ্ছি। অন্য রাজ্য থেকে একাধিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শহরের কুখ্যাত অপরাধীদের ওপর নজরদারি চলছে।
পুলিসের একাংশের দাবি, শহরে যে পরিমাণে অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে সেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিহারের মুঙ্গের থেকে আসছে। এইসব ‘মুঙ্গের মেড’ আগ্নেয়াস্ত্র ‘দেশি কাট্টা’ আমদানি জেলা পুলিস কর্তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, পুলিসি নজরদারি সত্ত্বেও মুঙ্গের মেড আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে দার্জিলিং জেলায়। পুলিস সূত্রে খবর, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ ও ম্যাগাজিন-সহ মাঝেমধ্যে পুলিসের জালে ধরা পড়ছে অভিযুক্তরা। প্রাথমিকভাবে তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে, সব অস্ত্রই কিষানগঞ্জ হয়ে শিলিগুড়িতে ঢুকছে। এই অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। এক একটি কার্তুজের দাম প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। ম্যাগাজিনের দাম ঘোরাফেরা করে দুই থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, আগে শিলিগুড়িতে অস্ত্রের দাপট এতো ছিল না। তবে প্রায় ছ’সাত বছরে শহরে অস্ত্রের কারবার বেড়েছে। একদিকে যেমন শহর আয়তনে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর ভিন জেলার মানুষ শিলিগুড়িতে এসে বসবাস করছে। তার সঙ্গে বেড়েছে অপরাধ প্রবণতা এবং অস্ত্রের চাহিদা।
যদিও পুলিসের শীর্ষ আধিকারিকরা দাবি করেছেন, অস্ত্র পাচারকারীরা পাচারের আগেই ধরা পড়ছে। ফলে হাতবদলের সুযোগ হচ্ছে না। যদিও আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন থাকায় আরও বেশি সতর্ক পুলিস।