ধারের টাকা চাওয়ায় হেনস্তা, আত্মঘাতী কিশোরীসংবাদদাতা, বালুরঘাট: বাড়ির কাউকে না জানিয়ে চুপিসারে প্রেমিককে টাকা ধার। পরিবারের চাপে সেই টাকা আনতে গিয়ে প্রেমিকের পরিবারের হাতে হেনস্তা। অভিযোগ, প্রেমিক, তার মা ও বোন মিলে মারধর করে কিশোরীকে। এমনকী, সাইকেল রেখেই ওই কিশোরীকে বাড়ির বাইরে বের করে দেওয়া হয়। প্রেমিকের পরিবারের কাছে এই অপমান মেনে নিতে পারেনি কিশোরী। অভিমানে চরম সিদ্ধান্ত বছর সতেরোর এক কিশোরীর। গত রবিবার সন্ধ্যায় সেই কিশোরী আত্মঘাতী হয়। মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। আইসি সুমন্ত বিশ্বাস বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়েছে।
মৃত কিশোরীর বাড়ি বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে। অভিযুক্ত প্রেমিকের বাড়িও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে। অভিযুক্তের বোন মৃতার সহপাঠী। সেই সূত্রেই সহপাঠীর দাদার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় কিশোরীটির।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে কিশোরীটি নিজের ব্যাঙ্ক থেকে পাঁচ হাজার টাকা তুলে প্রেমিককে দেয়। পরে আরও টাকা চায় প্রেমিক। চুপিসারে বাবার চার হাজার টাকা নিয়ে প্রেমিকের হাতে দেয় কিশোরীটি। পরে বিষয়টি বুঝতে পারে কিশোরীর পরিবার। মেয়েকে টাকা আনার জন্য চাপ দেন তার বাবা ও মা। শনিবার সেই টাকা আনতে সাইকেল নিয়ে প্রেমিকের বাড়ি যায় কিশোরীটি। টাকা না দিয়ে কিশোরীকে সেখানেই হেনস্তা ও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সাইকেল রেখেই টোটোয় চেপে বাড়ি ফিরে আসে অপমানিত কিশোরীটি। বাড়িতেও পরিবারের কয়েকজন বকা দেয় কিশোরীকে।
প্রেমিক, তার বোন ও মায়ের কাছে হেনস্তায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অভিমানে রবিবার বিকেলে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে কিশোরীটি। মৃতার বাবা ও মায়ের অভিযোগ, আমাদের মেয়ে ওই যুবকের বাড়ি গেলে তাকে মারধর করে। এটা মেনে নিতে পারেনি মেয়ে। তাদের জন্যই আমাদের মেয়ের মৃত্যু হল। আমরা পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছি। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাই।
গৃহশিক্ষকের লালসার শিকার দ্বাদশের ছাত্রীসংবাদদাতা, ইটাহার: দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার গৃহশিক্ষক। ওই ছাত্রীকে হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করে মুখ বন্ধ রাখার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুলিস সূত্রে খবর, শিক্ষক ও ছাত্রীর বাড়ি ইটাহারের দুটি এলাকায়। অভিযুক্ত শিক্ষক বাড়িতেই সংস্কৃত টিউশন পড়ান। দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী প্রায় এক বছর ওই শিক্ষকের কাছে টিউশন পড়ছিল। গত ৫ জুন শিক্ষকের কাছে টিউশন পড়তে গিয়েছিল ছাত্রী। পড়াশোনা শেষে টিউশনের সমস্ত পড়ুয়া বাড়ি চলে যায়। অভিযোগকারী পড়ুয়া বাড়ি যেতে চাইলে কিছু কাজ আছে বলে শিক্ষক তাকে ঘরে বসতে বলেন। ছাত্রী ঘরে ঢুকতেই শিক্ষক দরজা বন্ধ করে দেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে সেই সময় কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন ওই শিক্ষক। এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে ছাত্রী পালানোর চেষ্টা করলেও শিক্ষকের শক্তির সঙ্গে পেরে ওঠেনি। তাকে আটকে রাখেন ওই শিক্ষক। কিছুতেই বাইরে যেতে দেয়নি। এসবের পর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন শিক্ষক। ঘটনার কথা কাউকে জানালে ছাত্রীকে প্রাণে মারার হুমকি দেন ওই শিক্ষক। বিপদ বুঝে তখন শিক্ষককে প্রাণপণে ধাক্কা দিয়ে কোনওমতে ঘর থেকে পালিয়ে যায় ছাত্রী। তবে, পরে হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ করে একাধিকবার শিক্ষক ভয় দেখান বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রী।
গৃহশিক্ষকের হুমকির মুখে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে ছাত্রী মঙ্গলবার ইটাহার থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে গৃহশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার ধৃতকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।