ট্যাংরাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছিল গোটা শহর। মা হারা ছেলের ঠিকানা এখন সরকারি একটি হোম। বাবাও রয়েছেন জেলে। প্রতীপের দায়িত্ব নিতে চাননি তার পরিবারের কেউ। একা জীবনের লড়াই লড়তে হবে ১৪ বছরের কিশোরকে। এর মধ্যে সরকারি হোমের তরফে নতুন স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে প্রতীপকে।
ঘটনাটি ঘটার পর থেকে হোমেই থাকতে শুরু করে প্রতীপ। সেখানেই কাটিয়ে ওঠে ঘটনার মানসিক চাপ। চারমাস পরে স্কুলে যাবে প্রতীপ। আগে সে পড়তো ট্যাংরার একটি স্কুলে। স্কুলে যেত দিদির সঙ্গে। সপ্তম শ্রেণীর পরীক্ষা হওয়ার আগেই ঘটে যায় এই হাড়হিম করা ঘটনা। আবারও স্কুলে যাবে সে। সরকারি স্কুলে গিয়ে সে কতটা মানিয়ে নিতে পারবে তা ভাবাচ্ছে হোম কর্তৃপক্ষকে। যদিও শিশু কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্কুলে মানিয়ে নিতে সময় লাগলেও, তা কোনো সমস্যার কারণ হবে না। সমবয়সীদের সাথে কথা বললে শিশুমন ভালো থাকার কথা।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্যাংরায় দে পরিবারের দুই স্ত্রীর হাতের শিরা এবং গলা কেটে তার সঙ্গে কিশোরী মেয়ের শ্বাসরোধ করে খুন করার ঘটনা ঘটেছিল। বিপুল টাকা ঋণ করে নেওয়ার চাপ থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেই দুই ভাই। গোটাপরিবারসহ নিজেদেরকেও শেষ করে ফেলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু বেঁচে যায় দুই ভাই সহ প্রতীপ দে। বর্তমানে দুই ভাই জেলের তদারকিতে। প্রসূন দে’র ছেলে প্রতীপ দে রয়েছে সরকারি একটি হোমে। পরিবারের কেউ রাখতে চায়নি প্রতীপকে। পরে মৃত কাকিমার বাড়ির লোক প্রতীপের দায়িত্ব নিতে চাইলে প্রশ্ন ওঠে বাবা বেঁচে থাকাকালীন দত্তক নেওয়া কতটা আইনসংগত। এরপর তার দাদু ঠাকুমার কাছেই থাকবে কিনা প্রতীপ তা নিয়ে চলছে আলোচনা। তাঁদের আর্থিক অবস্থাও খতিয়ে দেখছে শিশু কল্যাণ সমিতি। তবে এই পরিস্থিতিতে ১৪ বছরের কিশোরটির ভবিষ্যৎ কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।