বরুণ সেনগুপ্ত: চরম অমানবিক ঘটনা সাক্ষী রইল উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ। বাড়ির মেয়ের মৃতদেহ বাড়ির বাইরেই পড়ে রইল টানা ৬ ঘণ্টা। নিল না পরিবার। এনিয়ে প্রবল হইচই পড়ে গেল গোটা এলাকায়। অবশেষে পুলিসের হস্তক্ষেপে বন্ধুরাই শেষকৃত্য সম্পন্ন করল মৃত তরুণীর।
মৃত তরুণী সায়ন্তি দাস(৩৪) ছিলেন ক্যানসার আক্রান্ত। সম্প্রতি তাঁর শরীর খারাপ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালেই গতকাল দুপুরে মৃত্যু হয় সায়ন্তির। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে সেইসময় হাসপাতালে ছিল না পরিবারের কেউ। সায়ন্তির বন্ধুরাই তার মৃত্যুর খবর তার দাদা-বৌদিকে জানায়। আর ওই খবর পেয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে উধাও হয়ে যায় দাদা-বৌদি। এমনটাই দাবি বন্ধু ও স্থানীয়দের।
খড়দহ পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল এলাকায় দাদা-বৌদির সঙ্গে থাকতেন ৩৪ বছরের সায়ন্তি দাস। চাকরি করতেন খড়দহের এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের লাইব্রেরিয়ান পদে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য সম্পত্তি নিয়ে দাদা-বৌদির সঙ্গে বিবাদ লেগেই থাকত সায়ন্তির। তার জেরেই সায়ন্তিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় দাদা-বৌদি। বাড়িছাড়া হয়ে ক্যানসার রোগী সায়ন্তি শেষপর্যন্ত আশ্রয় নেন বন্ধুদের কাছে। তার শরীর খারাপ করে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। কিন্তু সেই মৃতদেহ নিয়ে চলল টানাপোড়েন। সেই মৃতদেহ বাড়ির সামনে পড়ে রইল প্রায় ৬ ঘণ্টা। শেষপর্যন্ত পুলিসের সহযাগিতায় সায়ন্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মৃত সায়ন্তি দাসের বন্ধু টিনা ওঝা বলেন, সায়ন্তি যখন নার্সিংহোমে ভর্তি ছিল তখন ওরা দাদা-বৌদিকে খবর দেওয়া হয়। মারা যাওয়ার পরও জানানো হয়। ওরা কেউ আসেনি। ওর ক্যানসার ছিল। ওর দাদা ওকে থাকতে দিত না। শেষপর্যন্ত আমার বাড়িতে ছিল। মারা যাওয়ার পর ওর মৃতদেহ ওর বাড়িতে নিয়ে আসি। কিন্তু ওর বাড়ির লোক কেউ আসছে না। বাড়ি তালাবন্ধ করে চলে গিয়েছে। যতটা শুনেছি তা হল ওর দাদার সঙ্গে ওর সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত দাস বলেন, অমানবিক ঘটনা। ওর বাড়ির লোককে বারবার ডাকা হল। কেউ আসেনি। মৃতদেহ যারা নিয়ে এসেছে তারা সবাই মৃতার কলিগ। এরা আর কী করতে পারে। পুলিস ওদের অনুমতি দিচ্ছে না শেষকৃত্য করার। ওর দিদি বলছে আসবে না। প্রায় ৬ ঘণ্টা দেহটা রাস্তায় পড়ে রয়েছে। ভালো মেয়ে ছিল। ওদের একটা পারিবারিক সমস্যা ছিল।