বোমা বাঁধতে গিয়ে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির। মুর্শিদাবাদের ডোমকল পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের লেবুগাড়ার মাঠের ঘটনা। মৃতের নাম চান্দু শেখ ওরফে সফিকুল। ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। তাঁর বয়স ৩০ বছর। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, বোমা বাঁধার সময় আচমকা ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে বোমা তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঠিক কী উদ্দেশ্যে বোমা তৈরি করা হচ্ছিল, তা স্পষ্ট নয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। লেবুগাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের টহল চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। তার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডোমকল থানার পুলিশ। চান্দু শেখের বাবা মিন্নাত আলি বলেন, ‘আমার টোটো গাড়িতে করেই বহরমপুরে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম ছেলেকে। কিন্তু রাস্তাতেই মৃত্যু হয়। তখন আবার বাড়িতে নিয়ে আসি। কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। তবুও কেন এমন হল বুঝতে পাচ্ছি না।’ পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। চান্দু হঠাৎ হঠাৎ বোমা বাঁধতে গেলেন কেন? কে বা কারা বরাত দিয়েছিল? কেনই বা এই বরাত দেওয়া হয়েছিল, এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শাসক দলের অন্দরে কলহ রয়েছে, তাছাড়া সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেই বাজার ধরতেই নাকি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে শক্তি প্রদর্শনের জন্য বোমা বাঁধা, তা পুলিশের তদন্ত করে দেখা দরকার।’ তৃণমূলের ডোমকল টাউন সভাপতি কামরুজ্জামান মণ্ডল বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। ছেলেটি কেন বোমা বাঁধতে গিয়েছিলেন, তা তাঁর বাবাই বলতে পারছেন না। পুলিশ আছে, নিশ্চয় তদন্ত করে এর আসল কারণ বের করবে।’ সিপিএম সব কিছুতেই ‘শাসকদলের ভূত’ দেখে বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি ডোমকল থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানার ছাগলখালি মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয় দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দু’রাউন্ড গুলি। ইন্তাজুল শেখ ও রাজু মণ্ডল নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দু’জনেই ডোমকল থানা এলাকার বাসিন্দা। আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কোথা থেকে এসেছে এবং কোথায় পাচার করা হচ্ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি সংগ্রহ করে ওই দুই ব্যক্তি রানিনগর থানা এলাকায় একজনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন।