বাংলাদেশে কবিগুরুর বাড়ি ভাঙচুর, ‘প্রতিবেশী’র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে মোদিকে চিঠি মমতার
প্রতিদিন | ১৩ জুন ২০২৫
মলয় কুণ্ডু ও নব্যেন্দু হাজরা: ইউনুসের বাংলাদেশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা। আরও একবার প্রতিবেশী দেশে অরাজকতার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জে ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত কবিগুরুর পৈতৃক বাড়িতে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। বৃহস্পতিবার সকালে তা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ওই দর্শনীয় স্থানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সেখানকার পুরাতত্ব বিভাগ। এনিয়ে প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ঐতিহাসিক স্থান, কবিগুরুর পৈতৃক বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার কথা জানতে পেরে আমি অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছি। এটা শুধু বাড়ি ভাঙচুরই নয়। রবীন্দ্রনাথের বহু অসামান্য সৃষ্টির নেপথ্যে এই বাড়িটি। তাই আমরা মনে করি, এই হামলা সেসব সৃষ্টির উপর আক্রমণ। বাংলার মানুষও তাই মনে করে। এটা কবিগুরুর নিরন্তর সৃষ্টিকর্মের প্রতি অবমাননা।’
জানা গিয়েছে, বাড়ির মধ্যে থাকা অডিটোরিয়ামেও ভাঙচুর করা হয়। তাতে বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। এত বড় অশান্তির সময় পুলিশ কোথায় ছিল? কেন সঙ্গে সঙ্গে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি? সে দেশের পুরাতত্ব বিভাগ অবশ্য সিরাজগঞ্জের এই বাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শুরু হয়েছে তদন্ত। হামলার জেরে আপাতত দর্শকদের জন্য বন্ধ থাকবে কাছারিবাড়ি।
মোদিকে পাঠানো চিঠির শেষাংশে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘আমি আপনার কাছে আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিবেশী দেশে আমাদের ঐতিহ্যের প্রতি এমন হিংসাত্মক কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। এভাবে যেন আর কোনও ঐতিহাসিক স্থাপত্য, নিদর্শন ধ্বংস না হয়। তার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিবাদ প্রয়োজন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু দুই বাংলার নন, গোটা বিশ্বের গর্ব। সময়ের দাবি মেনে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত সব কিছু রক্ষা করতে হবে আমাদের।’