দিঘা ধামে প্রথম রথযাত্রা নিয়ে নবান্নে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর, সুরক্ষা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব
আনন্দবাজার | ১২ জুন ২০২৫
আগামী ২৬ জুন, অর্থাৎ রথযাত্রার আগের দিন দিঘায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘায় রথযাত্রার আয়োজন নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জগন্নাথদেবের মন্দির প্রতিষ্ঠার পরে এ বছরই দিঘায় প্রথম বার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রথযাত্রা। যা ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী বাড়তি গুরুত্ব ও সতর্কতার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন নবান্নে আয়োজিত ওই বৈঠকে। অনুমান করা হচ্ছে, এ বছর প্রায় দুই থেকে আড়াই লক্ষ ভক্ত উপস্থিত হবেন দিঘায়। এই বিপুল জনসমাগম সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসন, পুলিশ, দমকল ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ জুন মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় পৌঁছবেন। ২৭ জুন রশি টেনে তিনি রথযাত্রার সূচনা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রথম সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে রশি টানবেন। দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দির থেকে পুরনো মন্দির, প্রায় এক কিলোমিটার পথ জুড়ে চলবে রথযাত্রা। ভক্তদের সুবিধার্থে দড়ি ফেলে রাখা হবে পুরো রাস্তাজুড়ে। উদ্দেশ্য, ভক্তদের সকলে যাতে অংশ নিতে পারেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে শুধুমাত্র অলিম্পিয়ান ও সাধুসন্তেরা রথের সামনে থাকতে পারবেন।
চলতি বছর মহাকুম্ভে ভিড়ের চাপে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তাই ‘ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট’-এ বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্য সরকার। যান নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নির্দিষ্ট সময়ে দড়ি টানার নির্দেশ, এবং সব রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সম্ভাব্য সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইসকনের রাধারমণ দাস, রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংস্থার প্রতিনিধিরা। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিজি রাজীব কুমার-সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তারাও।
বুধবার স্নানযাত্রা উপলক্ষে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে নিজের বাড়ির গাছের আম-কাঁঠাল পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তিনি জগন্নাথের কৃপায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসব পালনের বার্তা দিয়েছেন। পুরীর উপচার মেনে ১০৮টি তীর্থক্ষেত্র থেকে আনা স্নানযাত্রার বিশেষ জলে মেশানো হয়েছে গঙ্গা জল, তুলসীপাতা, কাঁচা দুধ, আতর, চন্দন এবং কর্পূর। সেই সঙ্গে জগন্নাথদেবকে ছাপান্ন ভোগ অর্পণ করা হয়েছে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে আনা আম ও কাঁঠালও রাখা হয়েছিল। মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রার মহড়া দেওয়া হয়েছে। বিশাল পুলিশি প্রহরায় ৭ নম্বর গেট দিয়ে রথ বার করে প্রায় ৫০০ মিটার পথ অতিক্রম করা হয়। আসন্ন রথযাত্রার দিন যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তাই পরখ করে দেখে নেওয়া হয়েছে বুধবার।