হাওড়ায় পর্নকাণ্ডের সেই শ্বেতা খানকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের বিক্ষোভ ঘিরে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হল। শ্বেতাকে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলার সময় তাঁকে চড়-থাপ্পড়ও মারলেন তৃণমূলের বিক্ষোভকারী মহিলাকর্মীরা। সেখানে ধৃতকে কোনওমতে বাঁচিয়ে অবশেষে হাওড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁকে আপাতত হাওড়া কোর্ট লকআপে রাখা হয়েছে।
হাওড়ার বাঁকড়া অঞ্চলের বিক্ষোভকারী তৃণমূলকর্মীদের অভিযোগ, দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দলকে কালিমালিপ্ত করেছেন শ্বেতা। তৃণমূলকর্মী শেখ আব্দুল সালাম বলেন, ‘‘ও (শ্বেতা) তৃণমূলের কেউ নয়। ওর ফাঁসি হওয়া উচিত।’’
শ্বেতার যদিও দাবি, “আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। একটু যাচাই করে দেখা হোক ঘটনাটা।” অভিযোগকারিণী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “ওই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। সন্তানও আছে।”
পর্নকাণ্ড এবং সোদপুরের তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বেতা খানকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আলিপুরে ভবানী ভবনের নিকটবর্তী একটি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, হাওড়ার বাঁকড়া এলাকার ফকিরপাড়ার ফ্ল্যাটে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা এক তরুণীকে আটকে রেখে শারীরিক অত্যাচার ও যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন শ্বেতা এবং আরিয়ান। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চাকরি দেবেন বলে তাদের মেয়েকে জোর করে পানশালায় কাজ করিয়েছিলেন আরিয়ান এবং তাঁর মা শ্বেতা। পরে পর্ন ভিডিয়োয় অভিনয় করানোর চাপ দেওয়া হত। রাজি না-হওয়ায় তরুণীকে অকথ্য অত্যাচার করেছেন মা-ছেলে। দিনের পর দিন তাঁকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগ।
গত শুক্রবার লুকিয়ে ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনও ভাবে পালিয়ে বাড়ি ফেরেন তরুণী। তার পর থেকে তিনি চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সাগর দত্ত হাসপাতালের আইসিসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে। পরিবার সূত্রে খবর, তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এর মধ্যে অভিযুক্ত শ্বেতা এবং পুত্র আরিয়ানের নানা কীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে। বাঁকড়ায় শ্বেতার প্রতিবেশীরা তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন। প্রোডাকশন হাউস খুলে পর্ন ভিডিয়োর ব্যবসা করার অভিযোগ মা-ছেলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কাজ দেওয়ার নাম করে তরুণীদের নিয়ে গিয়ে দেহব্যবসা করানোর।