• বর্ষা পুরোদমে শুরুর আগেই ডেঙ্গি রুখতে হানা
    আনন্দবাজার | ১২ জুন ২০২৫
  • গত দুটো মরসুমেই চোখ রাঙিয়েছিল ডেঙ্গি। চলতি বছরে তাই বর্ষা শুরুর আগেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় রীতিমতো অভিযান শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলা পরিষদ। শহর সংলগ্ন বিভিন্ন টায়ারের দোকানে মঙ্গলবার অভিযান হয়। নিম্নচাপের বৃষ্টি হচ্ছে মাঝেমধ্যেই, সেই জল বাইরে ফেলে রাখা টায়ারে জমে ডেঙ্গি মশার জন্ম দিচ্ছে। জমা জলে মশার বাড়বাড়ন্ত রুখতেই অভিযান বলে জানানো হয়।

    মঙ্গলবার, বর্ধমান শহর লাগোয়া নবাবহাট, ঝিঙুটি এবং কেশবগঞ্জ চটি এলাকায় এই অভিযান হয়। ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) জয়রাম হেমব্রম, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় সহ অন্য আধিকারিকরা। তাঁরা এলাকার বাস, ট্রাকের টায়ার বিক্রি করে এমন কয়েক’টি দোকানে হাজির হন। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নীচে ডাঁই করে রাখা রয়েছে বড় বড় টায়ার। বেশ কিছু টায়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলিও ফেলে রাখা হয়েছে। গত সপ্তাহে মাঝেমধ্যেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টির জল টায়ারে জমে জন্মাচ্ছে ডেঙ্গি সৃষ্টিকারী মশার লার্ভা। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরকারি আধিকারিকরা। যদিও অভিযান শুরু হতেই দোকানের কর্মীরা পালিয়ে যান বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।

    জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘‘বাড়ির মধ্যে, দোকানে কোথাও জল জমতে দেবেন না। জমা জলেই ডেঙ্গি মশার জন্ম হয়, এমন প্রচার সারা বছর চলে। তবুও একশ্রেণির মানুষ চূড়ান্ত অসচেতন। সেই কারণেই এই অভিযান।’’ তিনি জানান, দোকানের মালিক বা কর্মচারী কাউকে না পাওয়া যাওয়ায়, পঞ্চায়েত থেকে ওই দোকানগুলিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই তিনটি এলাকা যে পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে, সেই বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার উপরে খোলা আকাশের নীচে টায়ার জড়ো করবেন না। টায়ারে জল জমা আটকাতে ঢেকে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে রয়েছে এমন কিছু দোকানকে নোটিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভেক্টর কন্ট্রোল দলকেও ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

    জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ২০২৩ সালে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন প্রায় ২৮০০, পরের বছর ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা কমে হয় প্রায় ১৩০০। এই সংখ্যা চলতি বছরে আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে বর্ষার কাজ শুরু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম জানান, বুধবার জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮। যেটা গত দু’বছরের তুলনায় কম। তাঁর কথায়, ‘‘বর্ষায় এর প্রকোপ হয়তো কিছু বাড়বে। সেটা নাগালে রাখতে এই ধরনের অভিযান করা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)