আধ ঘণ্টার ঝড়ে লন্ডভন্ড একাধিক গ্রাম, বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা
বর্তমান | ১৩ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: মাত্র ৩০ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড একাধিক গ্রাম। কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ উপড়ে পড়েছে। আবার কোথাও বাড়ি, পোলট্রি ফার্ম, স্কুল, রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছের ডাল পড়ে জখম হয়েছেন এক বৃদ্ধা। বুধবার রাতে এমন দুর্যোগের ঘটনা খড়িবাড়ি ব্লকে ঘটেছে। এর মোকাবিলায় ময়দানে নামে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির দল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশকিছু গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এই দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন। এছাড়া ওই রাতে বজ্রপাতের জেরে শিলিগুড়ির কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। তা মেটানো হয়েছে বলে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি গ্রামের কয়েকশো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রিপল ও ত্রাণ বিলি করা হয় এদিন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকার উপরে দাঁড়াবে বলেই মনে হচ্ছে।
বিডিও দীপ্তি সাউ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির উপর নজর রাখা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ চলছে।
ওই রাতে আচমকা ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হয় খড়িবাড়ি ব্লকের বুড়াগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে। গ্রামবাসীরা বলেন, রাত ১১টা নাগাদ ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের প্রভাব পঞ্চায়েতের ছ’টি গ্রামেই পড়েছে। যার দাপট বেশি ছিল বাদলভিটা, রাঙালি ও জোরপাখড়ি গ্রামে। অসংখ্য গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে রাস্তার ওপর পড়ে। যারজেরে কিছু রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হাতিডোবায় গাছের ডাল বাড়ির উপর পড়ে জখম হন এক বৃদ্ধা। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য বাড়ি, পোলট্রি ফার্ম, গোয়াল ঘর ও দু’টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনওটির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে, আবার কোনওটির দেওয়ালের একাংশ ভেঙেছে।
রাত থেকেই অপারেশনে নামে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা টিম। রাতভর তারা করাত দিয়ে গাছ কেটে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করছেন গ্রামবাসীরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রাথমিক হিসেব অনুসারে ঝড়ে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০টি বাড়ি। প্রায় ৭০টি বিদ্যুতের খুঁটি হেলে গিয়েছে। হাজার খানেক গাছ উপড়ে পড়েছে।
এদিকে, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পাঁচটি টিম নামিয়েছে বণ্টন কোম্পানি। তারা এদিন বিকেল পর্যন্ত অপারেশন চালিয়েও তিনটি গ্রামের বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে পারেনি। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটে। একাধিক বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে গিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রয়োজনীয় কর্মী নামিয়ে খড়িবাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।