কার দখলে জঙ্গল ও অজয়ের বালিঘাট? দুই ‘দাদা’র লড়াই, উত্তপ্ত আউশগ্রাম
বর্তমান | ১৩ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: দুই ‘দাদা’র মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে। তাতে আতঙ্কে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। প্রায় দিনই দুই দাদার গ্যাং সংঘর্ষে জড়িয়ে যাচ্ছে। বোমাবাজি, পার্টি অফিস দখল, মারধরের ঘটনা লেগেই রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এর পিছনে রয়েছে জঙ্গলমহল এবং অজয় নদের বালি। যার দখলে থাকে ক্ষমতা সে-ই অজয়ের ঘাট নিয়ন্ত্রণ করে। এই নদের বালির ঘাটে টাকা ওড়ে। বেআইনি বালিভর্তি গাড়ি বের করতে পারলেই মেলে মোটা টাকা। দামি গাড়ি, বাইক কেনা যায় সহজেই। এছাড়া জঙ্গলেও লুকিয়ে রয়েছে বহু সম্পদ। জঙ্গলের মধ্যে মোরাম খাদান করেও অনেকে মোটা টাকা লুট করেছে। সেই কারণে ক্ষমতা কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। পুলিসের বক্তব্য, এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত হলে কাউকে ছাড়া হবে না। তৃণমূল নেতৃত্বও সাফ জানিয়েছে, অরাজকতাকে কেউ প্রশ্রয় দিলে ছেড়ে কথা বলা হবে না। সবার উপরেই নেতৃত্ব নজর রাখছে। কে, কী করছে সব তথ্যই নেতৃত্বের কাছে রয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় বীরভূমের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এই বিধানসভা কেন্দ্র দেখভাল করতেন। তখন দুই ‘দাদা’ এক ছাতার তলায় ছিল। এই জুড়িকে বিরোধীরা সমঝে চলত। এখন দাদাদের রাস্তা বদল হয়েছে। দু’জন আলাদা পথের পথিক। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, জেলার অন্য কোনও ব্লকে সমস্যা নেই। শুধু আউশগ্রামেই নিজেদের মধ্যে লড়াই লাগছে। তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তাদের লড়াইয়ের বলি কে কখন কোথায় হবে, তা জানা নেই। কয়েকদিন আগেই এই ব্লকের নেতা অরূপ মিদ্দা বিডিও অফিসে ঢুকে হম্বিতম্বি করেন। বিডিওকে হুমকি দেন। তারজন্য তাঁকে জেলেও যেতে হয়। জামিন পাওয়ার পর আবার তিনি স্বমূর্তি ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ। যদিও তিনি বলেন, আমিও বহুদিন ধরে দল করে আসছি। কখনই অন্যায় মানব না।
মঙ্গলবার রাতে গেঁড়াই গ্রামে দলেরই অন্য গোষ্ঠী পার্টি অফিস দখল করতে যায়। এই এলাকাতেই বাড়ি দলের ব্লক সভাপতি আব্দুল লালনের। তাঁর লোকজন পার্টি অফিস দখলে বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। আউশগ্রাম থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তৃণমূলের যুবনেতা শেখ সঞ্জু বলেন, লোকসভা নির্বাচনেও যারা অন্য দলের হয়ে কাজ করত, তারাই পার্টি অফিস দখল করতে এসেছিল। দলের এক নেতা বলেন, ঘটনাটি নিয়ে দলীয়ভাবেও তদন্ত শুরু করেছে। তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, দলে থাকতে হলে শৃঙ্খলা মানতে হবে। যারা মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আউশগ্রামের গেড়াই গ্রামে তৃণমূলের পার্টি অফিসে উত্তেজনা।-নিজস্ব চিত্র