রামপুরহাটে চাল-ডাল সরবরাহ বন্ধ, বেশকিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাবান্না বন্ধ
বর্তমান | ১৩ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কোথাও পনেরো দিন, কোথাও আবার সাতদিন। রামপুরহাট ২ ব্লকের বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না করা খাবার দেওয়া বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র সেদ্ধ ডিম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত শিশু, প্রসূতি ও গর্ভবতী মায়েরা। ব্লক প্রকল্প আধিকারিক অভিযোগ সঠিক বলে স্বীকার করে নিলেও সেই খবর নেই বিডিওর কাছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, নিয়মিত সেন্টারগুলিতে পরিদর্শন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাদের। স্বভাবতই সেন্টারগুলিতে প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সোমবার থেকে শনিবার, সপ্তাহে ছয়দিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। কোনওদিন ভাত, ডিম, সব্জি। আবার কোনওদিন দেওয়া হয় খিচুড়ি। এই কেন্দ্রগুলিতে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত এবং শিশু এবং গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলারা ছয় মাস পর্যন্ত পুষ্টিকর খাবার পেয়ে থাকেন। কিন্তু দিন সাতেক ধরে রামপুরহাট ২ ব্লকের বেশ কিছু সেন্টারের উপভোক্তারা সেই পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন। অভিযোগ, কর্মী ও সহায়িকরা আসছেন, তাঁরা ডিম সেদ্ধ করে দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থেকে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
একটি সেন্টারের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বলেন, সব্জি নিত্যদিন কিনতে হয়। কিন্তু চাল, ডাল সহ আনুষঙ্গিক সামগ্রী সরবরাহ না থাকায় রান্না করা যাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুধুমাত্র ডিম সেদ্ধ করে উপভোক্তাদের দিচ্ছি। বাচ্চারা থালা, বাটি হাতে আসছে কিন্তু খাবার না পেয়ে তাদের ফিরে যাওয়া দেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। আরেক সেন্টারের সহায়িকা বলেন, সেন্টারে খাদ্য সামগ্রী সঙ্কট বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। মে মাসে শুধুমাত্র চাল মজুত ছিল। সেটা দিয়ে কোনওরকমে খিচুরি করে বাচ্চা ও মায়েদের দেওয়া হয়েছে। জুন মাসের শুরু থেকেই চাল, ডাল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে রান্নাও বন্ধ। শুধুমাত্র দোকান থেকে ডিম কিনে সেদ্ধ করে দিচ্ছি। অথচ পাশের রামপুরহাট ১ ব্লকে কোনও সমস্যা নেই। তিনি বলেন, বহু দুঃস্থ পরিবারের শিশু রয়েছে, যাদের দুপুরের খাবার বলতে এটিই।
তবে কিছু সেন্টারে এখনও চাল, ডাল মজুত থাকায় সেখান থেকে রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। তবে দ্রুত সরবরাহ না আসলে সেগুলিরও একই অবস্থা হবে। স্বভাবতই ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামগঞ্জে।
এব্যাপারে বিডিও অর্ঘ্য দত্ত বলেন, বিষয়টি জানা নেই। অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারগুলি তো সিডিপিওর অধীনে। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে।
এদিকে এই ব্লকে স্থায়ী কোনও সিডিপিও নেই। সায়ন্তন মান্না নামে যিনি রয়েছেন, তিনি রামপুরহাট ১, ২ ও নলহাটির দায়িত্বে রয়েছেন। যদিও সায়ন্তনবাবু বলেন, ডিলারশিপ পরিবর্তন হওয়ায় চালের অভাবের জন্য এই সমস্যা হয়েছে। জেলা স্তরে বিষয়টি অনেকেই জানেন। অর্ডার দেওয়া হয়েছে। আজ বা কালের মধ্যেই সেন্টারগুলিতে চাল, ডাল ঢুকতে শুরু করবে। যদিও জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। কিছুদিন আগেই ডিলারশিপ পরিবর্তন করে অন্যজনকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দেখে নিচ্ছি। প্রতীকী ছবি