• নিয়ম মেনে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে গেট বন্ধ, স্কুল গেট খোলাতে শান্তিপুরের বিধায়কের দ্বারস্থ অভিভাবকরা
    বর্তমান | ১৩ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: দেরিতে আসা হোক বা স্কুল পালানো, পড়ুয়াদের বদভ্যাস রুখতে কঠোর হয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিয়ম হয়, ১০টা ৪০ মিনিটের পর স্কুলে প্রবেশ করা যাবে না। কিন্তু, সেই নিয়মের বিরুদ্ধে সটান বিধায়কের বাড়িতে দৌড়ল অভিভাবকদের একাংশ। এই ঘটনা ঘটেছে শান্তিপুর শহরের রাধারানি নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলকে কেন্দ্র করে।

    শান্তিপুরের ‘ভালো স্কুল’ বলে খ্যাত রাধারানি নারী শিক্ষা মন্দির। পড়ুয়ার সংখ্যা আড়াই হাজার ছুঁইছুঁই। ভালো স্কুল হিসেবে গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে কর্তৃপক্ষের ‘ডিসিপ্লিন’। সম্প্রতি স্কুল পালানো, নিয়মিত দেরিতে আসা, জাতীয় সঙ্গীতের পরে হেলতে দুলতে বিদ্যালয়ে ঢোকার মতো অভ্যেস দূর করতে নতুন নিয়ম চালু করে কর্তৃপক্ষ। সাম্মানিককর্মী বাদে সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রীদের ১০টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ঢুকতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। নিয়ম করা হয়, একমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা সঙ্গত কারণ ছাড়া সময়ের পরে এলে স্কুলের গেট খোলা হবে না। ব্যাস, এতেই তৈরি হয় সমস্যা। নিয়ম হওয়ার পরেও কেউ কর্ণপাত করছে না দেখে বুধবার নির্ধারিত সময়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় গেট। 

    স্কুল সূত্রের খবর, নোটিসে একাধিকবার জানানোর পরেও ওইদিনও বেশকিছু ছাত্রী ১১টা নাগাদ স্কুলে আসে। যদিও তাদের এবং অভিভাবকদের অনুরোধ সত্ত্বেও গেট খুলতে চায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরের দিন নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে ঢোকার জন্য আবেদন জানায় কর্তৃপক্ষ। তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা দরকার বলে অভিভাবকদের বোঝানো হয়। তারপরেও কিছু অভিভাবক সোজা চলে যান শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর বাড়ি। স্কুলের নিয়ম পরিবর্তনের দাবি নিয়ে বিধায়কের কাছে যান। যদিও বিধায়ক না থাকায় দেখা হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হতেই তাজ্জব স্কুলের বাকি অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, স্কুল থেকে কেবলমাত্র পুঁথিগত শিক্ষাই নয়, নম্রতা, নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষাও পাওয়া যায়। নিয়ম না মানলে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি। দেরিতে স্কুলে আসার অভ্যাস সংশোধনের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিধায়কের কাছে নালিশ জানাতে যাওয়াটা যথেষ্ট নিন্দাজনক।

    স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তপতী মুখোপাধ্যায় বলেন, পড়ুয়াদের ভালোর জন্যই আমরা নিয়ম তৈরি করি। সেটার বিরুদ্ধে কেউ বিধায়কের কাছে যাবেন, এটা আশা করা যায়নি। আমরা দেখেছি, প্রার্থনা এবং মেডিটেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর কিছু পড়ুয়া স্কুলে আসে। অনেক সময় অভিভাবকরাই বলেন, বাড়ি থেকে পড়ুয়ারা সময়ে বের হয়। কিন্তু, তারা রাস্তায় দেরি করে। সেই অভ্যাস পাল্টাতেই এই নিয়ম। সেটা মানলে তাঁদের সন্তানদেরই ভালো হবে। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, কয়েকজন অভিভাবক আমার অফিসে গিয়েছিলেন বলে শুনলাম। তবে আমি বিধানসভার অধিবেশনের কারণে শান্তিপুরের বাইরে রয়েছি। তাঁদের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)