• কংক্রিটের সেতু চেয়ে আরামবাগে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, বিপর্যস্ত যান চলাচল
    বর্তমান | ১৩ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করতে হবে। এই দাবিতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল আরামবাগে। বৃহস্পতিবার আরামবাগের আরাণ্ডিতে বাসিন্দারা অবরোধ করেন। রাস্তায় গাছ, বাঁশ-কঞ্চি ফেলে অবরোধ করা হয়। উত্তেজিত জনতা তাতে আগুনও ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিকরা গেলে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ চলে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর প্রায় ২টো পর্যন্ত টানা অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আরামবাগের মায়াপুর থেকে খানাকুল হয়ে গড়েরঘাট পর্যন্ত রাজ্য সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। তার জেরে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। জানা গিয়েছে, আরামবাগের আরাণ্ডিতে অরোরা খালের উপর ওই সেতু রয়েছে। বছর কয়েক আগে সেতুটির একাংশ ভেঙে পড়ে। তার ফলে বিঘ্নিত হয় চলাচল। বাসিন্দারা অস্থায়ীভাবে বাঁশ দিয়ে কোনওভাবে যাতায়াত করছিলেন। কিন্তু, সেটিও ভেঙে পড়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। ঝুঁকি নিয়ে খালের জল পেরিয়েও অনেকে চলাচল করেন। এর আগেও সেখানে পথ অবরোধ করে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। আরামবাগের বিডিও গিয়ে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। সামনেই চাষের মরশুম। এলাকার চাষিদের খাল পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে জমিতে যেতে হচ্ছে। তাই বর্ষার আগে সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর দাবিতে বাসিন্দারা রাস্তায় নামেন। সেই অবরোধে শামিল হন চাষিরাও। 

    আরামবাগের আরাণ্ডি-১ পঞ্চায়েতের সঙ্গে মাধবপুর পঞ্চায়েতের সংযোগ করেছে ওই সেতু। আরাণ্ডি এলাকার অনেকের চাষের জমি রয়েছে মাধবপুর অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে। ফলে চাষের কাজে তাঁদের সেখানে যাতায়াত করতে হয়। তারসঙ্গে অন্যান্য কাজেও যাতায়াতের জন্য এই সেতুতে সহজে যোগাযোগ করা যায়। কিন্তু, বন্যার জলের তোড়ে সেতু ভেঙে যাওয়ার পর আর সেখানে নতুন করে তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাই এদিন তাঁরা আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ান। সকাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। শাখা রাস্তাগুলিও বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারীরা। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও অবরোধে অংশ নেন। যতক্ষণ পর্যন্ত সেতু তৈরির জন্য নির্মাণ সামগ্রী না নামছে, ততক্ষণ অবরোধ চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। 

    পরে আরামবাগ থানার আইসি রাকেশ সিং ঘটনাস্থলে পৌঁছন। আরামবাগের বিডিও সুব্রত মল্লিকও আসেন। তাঁদের ঘিরেও তুমুল বিক্ষোভ চলে। অবরোধ না ওঠায় আরামবাগের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সোমনাথ দত্ত গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা দ্রুত সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়ে অবরোধ ওঠে।  স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আসলাম হোসেন, শ্রীমতী মালিক বলেন, এই সেতু ভেঙে যাওয়ায় আমরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছি। নিত্যদিন আমাদের ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিরা বারবার এসে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজ হয়নি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এই সেতুর ব্যাপারে জেলাশাসক অবহিত আছেন। সেতুর নকশার অনুমোদন হয়েছে। দ্রুত সেতুর কাজ শুরু হয়ে যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)