• গ্রুপ সি এবং ডি কর্মীদের ভাতা নিয়ে ফের মামলা হাইকোর্টে, রায়দান স্থগিত
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ জুন ২০২৫
  • এসএসসির গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা নিয়ে ফের মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসেই মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার সওয়াল-জবাবের পর এই মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। উল্লেখ্য, বিচারপতি সিনহার বেঞ্চে ভাতা সংক্রান্ত অন্য একটি মামলারও শুনানি হয়েছিল দিন কয়েক আগে। সেই মামলায় রায়দান স্থগিত রয়েছে।

    রাজ্যের তরফে শুক্রবার আদালতে প্রশ্ন তোলা হয়, ‘ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে মামলাকারীদের স্বার্থ আদৌ জড়িয়ে রয়েছে? কেন মামলাকারীরা ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবেন?’ মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে ওই কর্মীদের। সেই নির্দেশ পুরোপুরি মানা হচ্ছে না। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে, এমন বিষয়ে আইনসভা বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কর প্রদান করেন, এমন যে কোনও নাগরিকই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা করতে পারেন। জনগণের টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে, তা নাগরিকদের জানার অধিকার রয়েছে। ফলে মামলাকারীর স্বার্থের বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না।’

    দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এর আগে একটি শুনানিতে ভাতা দেওয়ার বিষয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহা রাজ্যকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘যাঁরা এই টাকা পাবেন, তাঁদের থেকে রাজ্য প্রতিদানে কী পাবে? সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে, আর এরা টাকা পেতে থাকবেন? বেকারদের জন্য কি রাজ্য এই ধরনের কোনও প্রকল্প চালু করেছে বা চালু করার কথা ভাবছে?’

    প্রসঙ্গত, এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের বেতন দিতে বলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। যদিও চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা নেই। কারণ শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। এই অবস্থায় তাঁদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছিলেন, গ্রুপ সি কর্মীরা মাসিক ২৫ টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীরা মাসিক ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। গত ১৫ মে ওই ভাতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। নবান্ন জানিয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টেরিম স্কিম, ২০২৫’ প্রকল্পের অধীনে ওই ভাতা দেওয়া হবে। তা কার্যকর করা হবে গত এপ্রিল মাস থেকে।

    গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আগেও কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা মামলা করেছিলেন। মামলাকারীদের দাবি ছিল, রাজ্যের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ জারি করুক হাইকোর্ট। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তুলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কোনও রকম আলোচনা বা স্ক্রুটিনি ছাড়াই কেন তড়িঘড়ি এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? সেই মামলারও রায়ও দেননি বিচারপতি সিনহা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)