• ‘ফাঁসানো হয়েছে’, দাবি হাওড়া কাণ্ডে ধৃত শ্বেতা খানের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ জুন ২০২৫
  • তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন হাওড়া কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শ্বেতা খান। সোদপুরের তরুণীকে আটকে রেখে তাঁর উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে বুধবারই শ্বেতা ও তাঁর ছেলে আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধরা হয়েছে শ্বেতার ১৩ বছরের কন্যাকেও।

    বৃহস্পতিবার শ্বেতার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য তাঁকে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে থানায় ফেরার সময় তিনি দাবি করেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। একটু যাচাই করে দেখা হোক ঘটনাটা।’ এর পিছনে হাওড়া পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর নাসরিন খানের স্বামী গুড্ডু খান রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সোদপুরের অভিযোগকারী তরুণী প্রসঙ্গে শ্বেতা বলেন, ‘ওই মেয়েটার বিয়ে হয়েছে। সন্তানও আছে।’ এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় শ্বেতাকে চড়–থাপ্পড় মারেন তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা।

    শ্বেতার অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে হাওড়া পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর নাসরিন খানের স্বামী গুড্ডু খান ওরফে মাসুদ আলম খান চক্রান্ত করেছেন। গুড্ডুর ছেলে আসাদ মাসুদ খান তাঁর মেয়েকে খুন করেছেন। শ্বেতা যাতে আর আদালতে যেতে না পারেন সেই কারণে অভিযোগকারিণীর সঙ্গে মিলে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নির্যাতিতা তরুণীর মা। পুলিশ শ্বেতার অভিযোগও খতিয়ে দেখছে।

    এ দিন শ্বেতাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ ঘিরে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়। প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় তাঁকে চড়–থাপ্পড়ও মারতে দেখা যায় তৃণমূলের মহিলাকর্মীদের। সেখানে থেকে কোনওমতে তাঁকে উদ্ধার করে হাওড়া আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।

    উল্লেখ্য, কাজ দেওয়ার নাম করে গত ছয় মাস ধরে হাওড়ার বাঁকড়ার ফ্ল্যাটে আটকে রেখে সোদপুরের এক তরুণীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বেতা খান, তাঁর ছেলে আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার ওই তরুণী কোনওভাবে বাড়িতে পালিয়ে আসেন। এরপরই মা–ছেলের কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসে। পাঁচ দিন ধরে তল্লাশির পর অবশেষে শ্বেতা, আরিয়ান ও তাঁর বোনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে গল্ফগ্রিন থেকে আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে জেরা করে আলিপুরে ভবানী ভবনের সামনে থেকে শ্বেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় শ্বেতার কিশোরী কন্যাকেও।

    ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর অভিযুক্ত শ্বেতা তৃণমূল–ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ উঠেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে তৃণমূলের কর্মী হিসেবে দাবি করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দলকে কালিমালিপ্ত করেছেন শ্বেতা। দলকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দলের সঙ্গে অভিযুক্তের কোনও সম্পর্ক নেই। শ্বেতার ফাঁসির দাবি তুলেছেন তাঁরা। যদিও শ্বেতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছেন, এই মামলায় যেন বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)