• লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে উপকৃত ২ কোটি ১৫ লক্ষেরও বেশি মহিলা, জানাল রাজ্য সরকার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৪ জুন ২০২৫
  • রাজ্যের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মহিলাদের আর্থিক সহায়তার জন্য ২০২১ সালে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ২ কোটি ১৫ লক্ষের বেশি মহিলা, শুক্রবার বিধানসভায় এই তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি জানান, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে সরকারের প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

    পাথরপ্রতিমার তৃণমূল বিধায়ক সমীর জানা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে শুক্রবার বিধানসভায় প্রশ্ন করেছিলেন। সেই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দু’কোটি ১৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা।’

    ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ভাতা দেওয়া হয়। তারপর প্রাপকদের সরাসরি ‘বার্ধক্য ভাতা’ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করা হয়ে থাকে। শশী পাঁজা বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ছ’লক্ষ ৪ হাজার ৮৩৭ জনকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-এর বদলে বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের আওতায় টাকা দেয় সরকার। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প থেকে তফশিলি বন্ধুতে সুবিধা পাচ্ছেন ৪১ হাজার ৮৯২ জন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে জয় জোহার পাচ্ছেন ৬১৬৬ জন।’ ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে শুরু হওয়া ৮টি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে উপভোক্তারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছেন। এর বেশিরভাগ সংখ্যক মহিলাই এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাচ্ছেন বলে জানান শশী।

    প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পে রাজ্যের ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি মহিলারা রাজ্য সরকারের কাছে থেকে আর্থিক সহায়তা পান। রাজ্যে বসবাসকারী যে কোনও পরিবারের মহিলা সদস্য এই সুবিধা পেতে পারেন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে জনপ্রিয় এই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করে রাজ্য সরকার। আপাতত এই প্রকল্পের আওতায় তফসিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা মাসে ১২০০ টাকা এবং জেনারেল ক্যাটাগরির মহিলারা ১০০০ টাকা করে ভাতা পান।

    বিধানসভা শুক্রবার আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন নিয়ে প্রশ্ন করেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। সেই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, আগামী ১২ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারেন বলে জানান তিনি। আইনমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে মোট ছ’লক্ষ ৯৫ হাজার অমীমাংসিত মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের রয়েছে ৭৩ হাজার ১৬৪টি মামলা।

    নারী ও শিশু সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, বামফ্রন্ট জমানার তুলনায় রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। ২০১১ সালে রাজ‍্যে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৫৮৬। ২০২৫ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৪১০। ক্রেতাসুরক্ষা সংক্রান্ত জরিমানা প্রসঙ্গে রাজ্যের উপভোক্তা বিষয়ক বিভাগ মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র জানান, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ক্রেতাসুরক্ষা ক্ষেত্রে জরিমানা বাবদ ২ কোটি ১৩ লক্ষ ৪ হাজার ৮৮০ টাকা সংগৃহীত হয়েছে। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে ১০৬৯০টি মামলার মধ্যে ৪৮১৫ টি অভিযোগ সমাধান করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান বিপ্লব।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)