নিঃশব্দে হাতসাফাই ২ কোটি, লালবাজারের জালে তস্কর শিরোমণি ‘বিড়াল’!
প্রতিদিন | ১৪ জুন ২০২৫
অর্ণব আইচ: একেবারে নিঃশব্দে নিখুঁত অপারেশন! ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে সন্তর্পণে গয়না, টাকাপয়সা চুরি হয়ে যাবে অথচ কেউ টেরও পাবে না। উল্টোডাঙায় গ্রিল কেটে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতসাফাইয়ের ঘটনায় গোয়েন্দাদের জালে তস্কর শিরোমণি ‘বিড়াল’ ওরফে তাপস দে। তাকে গ্রেপ্তার করল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ ও উল্টোডাঙা থানার পুলিশ। ২০ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তার কাছ থেকে চুরির সমস্ত গয়না উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনা দিন তিনেক আগের। উল্টোডাঙা থানার কাছে সিআইটি স্কিমের বাসিন্দা বাজাজ পরিবারে গভীর রাতে জানলার গ্রিল কেটে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। রাতের অন্ধকারে বৃদ্ধ দম্পতির ঘর থেকে নগদ ও গয়না মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার সোনা, হিরের গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। চুরির অভিযোগ পেয়ে উল্টোডাঙা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রশ্ন উঠেছিল, পরিবারের সদস্যরা এমনভাবে ঘুমিয়ে পড়লেন যে, তাঁরা কিছুই টের পেলেন না কেন? সেই ক্ষেত্রে কি কোনও ঘুমের ওষুধ স্প্রে করা হয়েছিল? পরে তদন্তে নামে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগও। তদন্ত শুরুর পর সিসিটিভির ফুটেজে অন্তত দু’জনের চেহারা ধরা পড়ে বলে দাবি পুলিশের।
সেই সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতেই বছর পঁয়ত্রিশের তাপস দে ওরফে ‘বিড়াল’কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সূত্র ধরে বুবাই ধর নামে একজন ধরা পড়ে পুলিশের জালে। তার কাছেই চুরি করা গয়না তাপস বিক্রি করেছিল বলে জানা গিয়েছে। নিঃশব্দে হাতসাফাইয়ে পটু তাপস দে-র কীর্তিতে গোয়েন্দাদের বিস্ময়ের শেষ নেই। পুলিশ সূত্রে খবর, চুরিতে বছর পঁয়ত্রিশের যুবক এতটাই ওস্তাদ যে গ্রিল অথবা দরজা ? কোনও কিছু ভাঙার সময়েই কোনও শব্দ হয় না। এমনকী ঘরে ঢুকে চুরির জন্য ঘরের বাসিন্দাদের অচেতন করার জন্য কোনও রাসায়নিকও ব্যবহার করে না। গোটা অপারেশন সে একাই করে, একেবারে চুপিসাড়ে। ১৪, ১৫ বছর ধরে তাপসের এহেন কাজের জন্য তার নাম হয়েছে ‘বিড়াল’। উল্টোডাঙায় চুরির ধরন দেখেই লালবাজারের তদন্তকারীরা বুঝতে পেরেছিলেন যে এই কাজ ‘বিড়াল’ ওরফে তাপসের। অবশেষে যৌথভাবে তাকে জালে এনেছে উল্টোডাঙা থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দারা।