ডামি শিক্ষক: আজ পরিচালন কমিটির জরুরি বৈঠক নাচিন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে
বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঁথি: ডামি শিক্ষক-কাণ্ডে আজ, শনিবার জরুরিভিত্তিতে পরিচালন কমিটির বৈঠক ডাকল নাচিন্দা জীবনকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়। বেলা ২টোয় পরিচালন কমিটি এনিয়ে স্কুলে মিটিং ডেকেছে। সেখানে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। আগামী দিনে কীভাবে এই সঙ্কট থেকে রেহাই মিলবে, তা নিয়ে কমিটির সদস্যদের মতামত নেওয়া হবে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) অফিস গোটা বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস হওয়ায় আরও চাপ বেড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর।
কাঁথি-৩ব্লকের নাচিন্দা জীবনকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজির শিক্ষিকা মৌমিতা মাইতি জানা দীর্ঘদিন স্কুলে আসছেন না। ক্লাসও নেন না। তিনি মুগবেড়িয়ায় বাড়িতেই থাকেন। তাঁর স্বামী পেশায় চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ জানা এজন্য প্রতি মাসে স্কুলকে ৪০হাজার টাকা ডোনেশন দেন। সেই টাকায় পাঁচজন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক রেখেছে স্কুল। তাঁরা ক্লাস নেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সাম্মানিক দেয়। আর মাসিক ৪০হাজার টাকা ডোনেশনের বিনিময়ে মৌমিতাদেবী বাড়িতে বসে মাইনে পান।
‘বর্তমান’ সংবাদপত্রে ওই খবর প্রকাশিত হতেই গোটা জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। মাসিক ডোনেশনের বিনিময়ে একজন শিক্ষিকাকে আইন বর্হিভূতভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) অফিসও। ইতিমধ্যে ওই সংক্রান্ত সংবাদের কপি পাঠিয়ে কাঁথির অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের(মাধ্যমিক) কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পলাশ রায়। ওই রিপোর্ট বিকাশ ভবনে পাঠানো হবে বলেও পলাশবাবু জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এনিয়ে রাজ্য থেকে রিপোর্ট চাইবেই। তার আগে আমরা রিপোর্ট পাঠিয়ে দেব।আজ, শনিবার বেলা ২টোয় স্কুল পরিচালন কমিটির সভা হবে। সেখানে কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য অমৃতাংশু প্রধান, টিচার-ইন-চার্জ অশোককুমার মাইতি সহ অন্যান্য সদস্যরা থাকবেন। তার আগে শুক্রবার স্কুল কর্তৃপক্ষ ইংরেজির শিক্ষিকা মৌমিতা মাইতি জানা এবং তাঁর স্বামী তথা ভগবানপুর-২ব্লকের বিএমওএইচ রবীন্দ্রনাথ জানার সঙ্গে আলোচনা সেরেছে। প্রতি মাসে ৪০হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি রবীন্দ্রনাথবাবু স্বীকার করায় অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানায়। ওই শিক্ষিকার কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। কাঁথিতে এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এই অবস্থায় তিনি নিয়মিত স্কুলে আসবেন, নাকি বিকল্প কোনও পন্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের(মাধ্যমিক) নির্দেশে আগামী সপ্তাহে কাঁথির অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ওই স্কুল পরিদর্শনে যাবেন। তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠাবেন ডিআই অফিসে। তার আগে তড়িঘড়ি পরিচালন কমিটির বৈঠক করে সর্বসম্মতভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।