• Meghalaya Honeymoon Murder: খুন করে বোরখা পরে শিলিগুড়িতে সোনম, চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে
    এই সময় | ১৪ জুন ২০২৫
  • মেঘালয়ে রাজা রঘুবংশী খুনের তদন্তে যুক্ত হয়ে গেল শিলিগুড়ির নামও! স্বামীকে খুন করার পরে অভিযুক্ত সোনম শিলিগুড়ি শহরকেই গা ঢাকা দেওয়ার জায়গা হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন। এমনকী, কী ভাবে ওখানে ‘সারেন্ডার’ করবেন, সেই চিত্রনাট্যও তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

    কিন্তু শেষ মূহূর্তে পুলিশের একটি চাল বদলে দেয় সবকিছু। ফলে শিলিগুড়ির বদলে সোনম হাজির হয়ে যান বেনারস–গাজিপুর রোডের পাশে একটি ধাবায়। শুক্রবার ইস্ট খাসি হিলসের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম ‘এই সময়’–কে বলেন, ‘৮ জুন ইন্দোর থেকে সোনমের শিলিগুডি়তে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক অভিযুক্ত ধরা পড়ে যাওয়ায় রাজার একটি ফোন যাত্রাপথ পরিবর্তন করে দেয় তাঁর।’

    কিন্তু দেশের এত শহর থাকতে শিলিগুড়িকেই কেন বেছে নিয়েছিলেন স্বামী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সোনম? আপাতত সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘২৩ মে শিলং–এর সোহরা এলাকায় রাজাকে খুনের পরে সোনম নিজের রেনকোটটি আকাশ নামে এক অভিযুক্তকে দিয়ে একটি বোরখা পরে নেন।

    পালানোর সময়ে যাতে কেউ তাঁকে চিনতে না পারে সেজন্য খুনের অন্যতম চক্রী তথা সোনমের প্রেমিক রাজা কুশওহায়া আগে থেকেই বিশাল চৌহান নামে অন্য এক অভিযুক্তের মাধ্যমে বোরখাটি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

    নিজের পোশাক পরিবর্তনের পরে সোনম পাহাড়ি ওই এলাকা থেকে শহরে আসার জন্য আকাশের স্কুটিতে চেপে বসেন। এরপর পুলিশ বাজার এলাকায় পৌঁছে সেখান থেকে একটি ট্যাক্সিতে চেপে সোজা চলে যান গুয়াহাটি বাসস্ট্যান্ডে। পরেরদিন সকালে বাস থেকে নামেন শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে।

    সাত সকালে ওই এলাকার একটি দোকানে ব্রেকফাস্ট করে পাশের একটি কাউন্টার থেকে পাটনা যাওয়ার বাসের টিকিট কাটেন তিনি। এরপর পাটনা পৌঁছে সেখান থেকে আরা স্টেশনে যান। উঠে পড়েন লখনৌগামী ট্রেনে। ট্রেন থেকে নেমে ফের চাপেন ইন্দোরগামী বাসে।

    ⁠মধ‍্যপ্রদেশ পুলিশের দাবি, ২৫ মে ইন্দোরের দিওয়াস গেটের কাছে একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ওঠেন তিনি। ৭ জুন পর্যন্ত সবকিছুই পরিকল্পনামাফিক চলছিল। সোনম বাইরে না বেরোলেও প্রেমিক রাজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন মোবাইলের মাধ্যমে। দু’জন পরিকল্পনা করেন, ৮ তারিখ সোনম শিলিগুড়ির দিকে রওনা দেবেন।

    সেখানে কোনও একটি ফাঁকা জায়গায় থাকা চায়ের দোকানে বিধ্বস্ত অবস্থায় গিয়ে সোনম ক্রিপ্ট অনুযায়ী বলবেন, ‘আমার নাম সোনম রঘুবংশী। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। মেঘালয় থেকে অপহরণের পরে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়ে আমাকে এখানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    বিয়ের পরে স্বামী রাজা রঘুবংশীর সঙ্গে শিলং-এ হানিমুনে গিয়েছিলাম। কয়েকজন দুষ্কৃতী আমার স্বামীকে খুন করে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’ এই বয়ানে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে পরবর্তী প্ল্যান ছকে নেওয়ার সময় পাওয়া যাবে।

    কিন্তু ৮ তারিখ সকালেই পুরো পরিস্থিতি বদলে যায়। রাজার মাথায় কাটারি দিয়ে আঘাত করা আকাশ রাজপুতকে উত্তরপ্রদেশের ললিতপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এতেই ঘাবড়ে গিয়ে কৌশল পাল্টে ফেলেন সোনম এবং রাজ। ঠিক হয়, শিলিগুড়ি না গিয়ে উত্তরপ্রদেশ চলে যাবেন সোনম।

    কারণ, ওই রাজ্যে রাজের একাধিক পরিচিত থাকেন, যাঁরা প্রয়োজনে তাঁকে সাহায্য করতে পারবেন। এরপর রাজের ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে সোনম রওনা দেন পাটনার দিকে। সেখান থেকে যান গাজিপুরে। ততক্ষণে একাধিক অভিযুক্তকে তুলে নিয়েছে পুলিশ।

    ফলে তড়িঘড়ি রাস্তার পাশে একটি ঢাবাতে গিয়ে তিনি অপহরণের গল্প ফেঁদে বসেন। যদিও তা আর ধোপে টেকেনি। পুলিশ স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনের ঘটনার অভিযুক্ত হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

  • Link to this news (এই সময়)