• বৃষ্টি নেই, ভূগর্ভের জলও কমেছে, চিন্তায় পাট চাষিরা
    বর্তমান | ১৪ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: দীর্ঘদিন বৃষ্টি নেই। গ্রীষ্মের তাপে পুড়ছে জমির ফসল। জলের অভাবে চিন্তায় পাট ও সব্জি চাষিরা। জ্যৈষ্ঠ মাসের চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রার পারদ চড়তে শুরু করেছে। কড়া রোদ আর তাপপ্রবাহের কারণে মানুষের যেমন হাঁসফাঁস অবস্থা তেমনি সমস্ত জমির ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে। করিমপুরের এক চাষি মান্নান মণ্ডল বলেন, সপ্তাহে তিনদিন জলসেচ দিয়েও পটলের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির জল না হলে এই গাছ টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন। তার উপর পোকার উপদ্রব দেখা দিচ্ছে। একই অবস্থা লঙ্কা, ঝিঙে, কুমড়ো কিংবা বেগুনের খেতে। কুমড়ো চাষি দীপক সরকার জানান, প্রথমে বৃষ্টির জলে আনাজ চাষ করেছি। ক’দিন থেকে বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলাম। পরে বৃষ্টি না হওয়ায় বাধ্য হয়েই শ্যালো মেশিনের সেচের জল দিয়েছি। কিন্তু একদিন অন্তর জল না দিলেই জমি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। এভাবে একশো টাকা লিটার দরে ডিজেল কিনে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আরেক চাষি বলেন, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে যাওয়ায় এক ঘণ্টার জায়গায় সেচ দিতে হচ্ছে দুই ঘণ্টা। ফলে খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। আবার জল না দিলে গাছ মারা যাবে। এলাকার পাট চাষি প্রকাশ প্রামাণিক জানান, মাঠে পাট বোনার সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় বেশিরভাগ চাষি সেচের জলে পাট বীজ বপণ করেছেন। বৈশাখ মাসে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু গত প্রায় দুই সপ্তাহ এতো শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য পাট চাষিরা দু’ বার জল সেচ দিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না। এখন আমাদের কী করা উচিত সেটাই বুঝতে পারছি না। হোগলবেড়িয়ার একজন কলা চাষি উত্তম মণ্ডল বলেন, এই রুক্ষ আবহাওয়ায় কলাগাছ বাঁচিয়ে রাখা কঠিন। এমনিতেই এলাকায় ব্যাপক কলার চাষ হচ্ছে। সপ্তাহে দুই-তিনদিন সেচ দেওয়ার বিরাট খরচ বহন করা মুশকিল হয়ে পড়ছে। একদিন অন্তর জলসেচ দিয়েও গাছ বাঁচানো যাচ্ছে না। গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক গাছ মরে যাচ্ছে। গাছের কলার বৃদ্ধি হচ্ছে না এবং কলা পুষ্ট হওয়ার আগেই হলুদ হয়ে পেকে যাচ্ছে। চাষিরা জানাচ্ছেন, তীব্র গরমে মাঠে কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন কবে বৃষ্টি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
  • Link to this news (বর্তমান)