ধর্ম নয়, আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে ওবিসি সংরক্ষণ, জানাল অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ কমিশন
প্রতিদিন | ১৪ জুন ২০২৫
গোবিন্দ রায়: আর্থিকভাবে প্রতিটি অনগ্রসর শ্রেণির অবস্থা খতিয়ে দেখার পরই ওবিসি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ধর্মের কোনও বিষয়ই নেই। সমাজমাধ্যমে এবং বিভিন্ন আলোচনায় একটি অংশ এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার করছে বলে অভিযোগ তুলে সংরক্ষণ নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিল অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ কমিশন।
শুক্রবার রবীন্দ্র সদনে সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশন যে পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় এই তালিকা তৈরি করেছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ মানুষের থাকতেই পারে। আইনে সুযোগ আছে তার রিভিউ করার। কারও যদি আপত্তি থাকে, তারা রিভিউ চাইতেই পারে। সমাজমাধ্যমে এসব কথায় মানুষ আরও বিভ্রান্ত হচ্ছে ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে ভর্তির বিষয় আছে। চাকরির ব্যাপার আছে। তাই এটা কাম্য নয়।”
ইতিমধ্যেই কমিশনের সুপারিশ ও রাজ্য মন্ত্রিসভার বিজ্ঞপ্তি বিধানসভায় পেশ হয়েছে। এদিন কমিশন জানিয়েছে, স্কুল, কলেজ, বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আর কোনও জট আপাতত রইল না। নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাধা নেই। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হওয়া ১১৩টি-সহ মোট ১১৭টি অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্তির কাজ নতুন শুরু করে কমিশন। ওই রায়ে ওবিসি-এও ওবিসি-বি সাব-ক্যাটেগরিও বাতিল হয়। ফলে সংরক্ষণের হার ১৭শতাংশ থেকে কমে দাঁড়ায় মাত্র ৭শতাংশে। ফলে রাজ্যের বহু মানুষ সমস্যায় পড়েন। এরপরই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায়। আদালত রাজ্যকে ওবিসি তালিকা নতুন করে তৈরি করার অনুমতি দিয়ে তিন মাস সময় দেয়।
কমিশন সিআরআই, ব্যুরো অফ অ্যাপ্লায়েড ইকোনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস-কে দিয়ে সমীক্ষা ও যাচাইয়ের কাজ করে। তারপর জনশুনানি করা হয়। কমিশন জানিয়েছে, আগের ৬৬টি জাতির থেকে দু’টি বাদ পড়েছে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য। তবু সেই দু’টি জাতির ফের সমীক্ষা হবে। ১৪টি জাতি ওবিসি-এ থেকে বি-তে উন্নীত হয়েছে। আর কিছু বি-থেকে এসেছে এ-ক্যাটেগরিতে। এ ছাড়া ৭৬টি জাতির সমীক্ষা করে ১৪০টি জাতি তালিকাভুক্ত হয়েছে। আদালতের সাম্প্রতিক একটি নির্দেশ মেনে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল সংবাদপত্রে। তাতে সাতটি জাতি ওবিসি তালিকাভুক্ত হতে চেয়েছে। ফলে তাদের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত সমীক্ষা হবে।