উঠে গেল নিষেধাজ্ঞা, শনিবার থেকেই ইলিশ ধরতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেবেন মৎস্যজীবীরা...
আজকাল | ১৪ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার থেকেই ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেবেন জেলার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশের জোগান দিতে গভীর সমুদ্রে পাড়ি জমাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্য বন্দরগুলিতে সাজো সাজো রব।
কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা, রায়দিঘি পাথরপ্রতিমা, ক্যানিং, গোসাবা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক বন্দরগুলিতে চলছে শেষ বেলার প্রস্তুতি। নাওয়া–খাওয়া ভুলে মৎস্যজীবীরা ব্যস্ত নিজেদের মাছ ধরার সরঞ্জাম গোছাতে। চলছে জাল তৈরি থেকে ট্রলার সংস্কারের কাজ। মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর, ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন–এই দু’মাস সময় পর্যন্ত মাছের প্রজননের জন্য গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ১৪ জুন থেকে আবার মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারবেন মৎস্যজীবীরা। তাই এখন চলছে শেষ বেলার প্রস্তুতি।
মৎস্য বন্দরগুলিতে ট্রলারগুলিতে মজুত করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রি এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও বরফ। শেষবেলার প্রস্তুতি চলছে জোর গরমে। লাইফ জ্যাকেট থেকে শুরু করে লকবুক সমস্ত কিছু নথি ট্রলারে মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য দপ্তর। সেই নির্দেশও অক্ষরে অক্ষরে মানা হচ্ছে। অন্যদিকে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের রক্ষা করতে সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের তরফ থেকে বিপদ সঙ্কেত যন্ত্র ও প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে যদি মৎস্যজীবীরা কোনও বিপদে পড়েন তাহলে ইসরোর নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের জীবন বাঁচবে এবং কোথায় বেশি মাছ রয়েছে সেই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমেই দেখতে পাবেন মৎস্যজীবীরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মোট ট্রলারের সংখ্যা ৮৫০০। মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। এর ফলে যেকোনও রকমের বিপদের সম্মুখীন যদি মৎস্যজীবীরা হন গভীর সমুদ্রে, তাহলে দ্রুত সাহায্যে পৌঁছে যাবে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নৌবাহিনী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ–মৎস্য আধিকারিক (সামুদ্রিক) সুরজিৎ কুমার বাগ জানান, ‘ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনেই মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবেন। তবে ইলিশ ধরার জালের ফাঁস ৯০ মিলিমিটার হতে হবে। ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট মাছ ধরা যাবে না। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, লগ বুক জিপিআরএস ডিভাইস নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক।’ তিনি আরও বলেন ‘গত বছর তেমনভাবে মাছের দেখা পায়নি মৎস্যজীবীরা এর ফলে লাভও মৎস্যজীবীদের কম হয়েছে। আশা করা যায় এবছর সেই ক্ষতিপূরণ করে লাভের মুখ দেখবেন মৎস্যজীবীরা। মৎস্যজীবীদের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।’