আইসিকে কদর্য ভাষায় হুমকি অনুব্রত মণ্ডলের। আইনি প্যাঁচে তো আগেই পড়েছেন। বিরক্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বও। এ বার কলকাতায় ডেকে রীতিমতো ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ দেওয়া হলো বীরভূমের কেষ্ট মণ্ডলকে। জানালেন ফিরহাদ হাকিম। সেই ফিরহাদ, যিনি অনুব্রত গ্রেপ্তার হওয়ার পরে বীরভূমে দাঁড়িয়ে অনুব্রতকে বলেছিলেন, ‘বীরভূমের বাঘ’। শনিবার ভবানীপুরে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর অফিসে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক ছিল। সেখানে বীরভূমের কোর কমিটির সব সদস্যকেই হাজির হতে বলা হয়। সেই মতোই এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখরা।
২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠকের আগেই বীরভূম তৃণমূলের চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও কোর কমিটির সদস্য অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখকে নিয়ে বৈঠক করেন সুব্রত বক্সী ও ফিরহাদ হাকিম। অনুব্রত-কাজলের অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, হাতাহাতি বীরভূমে রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রোজই শিরোনামে জেলা।
তার উপরে আবার অনুব্রত মণ্ডলের অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বোলপুরের আইসি লিটন হালদারকে কদর্য ভাষায় হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে অনুব্রতকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, এই দ্বন্দ্ব ও অডিয়ো ভাইরাল হওয়ার ঘটনা নিয়েই কেষ্ট ও কাজলকে মুখোমুখি বসিয়ে কথা বলেন সুব্রত বক্সী। বিশেষ করে, বোলপুরের আইসির মা ও স্ত্রীকে নিয়ে অনুব্রত যা বলেছেন, তাতে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জামিন অযোগ্য ধারায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এসডিপিও অফিসে গিয়ে হাজিরা দিতে হয়েছে কেষ্ট মণ্ডলকে, মহিলা কমিশনও এ বিষয়ে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব করেছে প্রশাসনের কাছ থেকে। এ বার শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া বার্তা দিলেন অনুব্রতকে। বীরভূম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে এ দিন এই বৈঠক হয়।
এই বৈঠকের পরে ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা কেউই এ ধরনের কথা সমর্থন করি না। তাঁকে লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি আশা করি তিনি আর এই ভুল রিপিট করবেন না।’ যদিও একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের উপর কিছুটা গোঁসাও করেন ফিরহাদ। বলেন, ‘অনিল বোস, বিনয় কোঙার, বিজয়বর্গীয়দের সময়ে তো আপনারা প্রশ্ন করেন না। শুধু তৃণমূলের সময়েই প্রশ্ন তোলেন। তৃণমূল করলেই দোষ?’
রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘শাস্তি তো ওকে দেওয়াই হয়েছে। চড় থাপ্পড় মেরে তো আর শাস্তি হয় না। যথেষ্ট নামডাক আছে ওঁর। তার পরেও সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁকে চূড়ান্ত ভাবে সংযত থাকতে বলা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ রকম না করে।’