• বাঙালি বধূদের আধার কার্ড জমা নিল কাশ্মীরের পুলিস
    বর্তমান | ১৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: কাশ্মীরে বিয়ে হওয়া বাঙালি বধূদের বাপের বাড়ির পরিচয় পত্র দেখতে চাইল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিস। আধারকার্ড ও এপিক কার্ডের জেরক্স নিয়ে সাত সকালেই সেখানকার থানাগুলিতে হাজির হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। রবিবার এমনটাই দাবি করেছেন ওইসব বধূদের বাবার বাড়ির লোকজন। ফলে, সকালে কয়েকঘণ্টা উৎকণ্ঠায় কাটালেন ভরতপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের।এদিন, সাত সকালেই পরিচয়পত্র খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভরতপুরের একাধিক বাসিন্দা। কেউ বাক্স থেকে আধারকার্ড, ভোটার কার্ড খুঁজে বেড়ান। কেউ আবার জমির কাগজপত্রও খুঁজে বের করেছেন। এরপর সেগুলিকে নিয়ে মোবাইল ব্যবহারকারী যুবকদের কাছে দরবার করছেন। নথিপত্রগুলি ছবি করে কাশ্মীরে থাকা মেয়েদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার আর্জি করছেন। বেলা ১২টার মধ্যেই ছবি পাঠানোর ব্যবস্থা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। ভরতপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামের দুঃস্থ পরিবারের যুবতীদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরি যুবকদের সঙ্গে। তাঁদের কারও সম্প্রতি, কারও ৩০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। কারও আবার তারও আগে বিয়ে হয়েছে। এমন অবস্থায় এদিন সাত সকালেই কাশ্মীরি বধূদের অনেকের ফোন আসে ভরতপুরের বাবার বাড়িতে। তাঁরা তাঁদের বাবা-মা সহ আত্মীয়দের আধারকার্ড, এপিক কার্ডের ছবি তুলে দ্রুত পাঠানোর কথা বলছিলেন। আঙারপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার শেখ বলেন, ‘আমার বোনের বিয়ে দিয়েছি জম্মুতে। সেখান থেকে সকাল সাতটায় ফোন করে আমাদের পরিচয়পত্রগুলি চাইছিল। হঠাৎ এমন প্রয়োজনের কারণ জানারও সময় পাইনি। পরে জানতে পারি সেগুলি ওখানকার থানায় জমা দিতে হবে।’ ভরতপুর ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গির শেখ বলেন, 

    ‘আমার দুই বোনের বিয়ে হয়েছে কাশ্মীরে। আসলে কাশ্মীরের বিভিন্ন থানা থেকে বলা হয়েছিল সেখানকার বাঙালি বধূদের বাবার বাড়ির লোকজনের পরিচয়পত্রের জেরক্স জমা দেওয়ার জন্য। হয়তো বাঙালি বধূরা বাংলাদেশি কি না, সেটা জানার জন্যই এসব করা হয়েছে।’ ভরতপুর আসাননগর পাড়ার বাসিন্দা মোজাফ্ফর শেখ বলেন, ‘হঠাৎ এমন প্রয়োজন শুনেই খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। ওখানে ফের কী হল ভেবেই ছুটোছুটি শুরু করেছিলাম।’

    এদিন কাশ্মীরের গন্ধেরবল থানায় গিয়ে ভরতপুরের বাবার বাড়ির লোকজনের পরিচয়পত্র জমা করছিলেন সিন্দবাল গ্রামের বধূ হাসিনা বানো। ফোনে তিনি বলছিলেন, ‘সমস্যা কিছু হয়নি। আসলে এদিন সকালে বিভিন্ন মারফত পুলিস খবর পাঠায় যে বাঙালি বধূদের বাবার বাড়ির লোকজনের পরিচয়পত্রের জেরক্স জমা করতে হবে। সেইমত আমরা বাবার বাড়ি থেকে হোয়াটস অ্যাপে সেগুলি সংগ্রহ করে থানায় জমা দিয়েছি। তবে, কাশ্মীরের পুলিস আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছে। কোনও সমস্যা হলে পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে। অপর কাশ্মীরি বধূ মীরা বানো বলেন, ‘এগুলি জমা দেওয়ার পর পুলিস আমাদের বলেছে কোনও চিন্তা নেই। বাবার বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছে হলেও পুলিস সহযোগিতা করবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)