ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় চাপ! ঘর থেকে মিলল যুবকের দেহ, চাঞ্চল্য নদিয়ায়
প্রতিদিন | ১৭ জুন ২০২৫
সুবীর দাস, কল্যাণী: বেসরকারি আর্থিক সংস্থার থেকে ছেলের চিকিৎসার জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ না থাকার ঋণের মাসিক কিস্তির টাকা দিতে পারছিলেন না। টাকা না দিতে পারার জন্য চাপও বাড়ছিল বলে খবর। আজ, সোমবার বাড়িতে ওই সংস্থার থেকে টাকা নিতে আসার কথাও ছিল। তার আগেই গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল ওই যুবকের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, নদিয়ার হরিণঘাটা থানার মোহনপুরে। মৃত ব্যক্তির নাম সুব্রত কর্মকার(২৮)। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, সুব্রত কর্মকার পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন। হরিণঘাটা মোহনপুর ২ নম্বর গেট সংলগ্ন পাঁচিলের ধারে একটি বাড়িতে দুই সন্তান ও স্ত্রী ঝুমাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। জানা গিয়েছে, ৯ বছরের ছেলে চোখে দেখতে পায় না। দেড় বছরের ছোট শিশুটিরও স্বরযন্ত্রে সমস্যা আছে বলে খবর। সন্তানদের চিকিৎসার জন্য বছর দেড় আগে তিনি একটি আর্থিক সংস্থার থেকে ৭৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। মাসিক কিস্তির পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার টাকা। প্রথম এক বছর প্রতি মাসে কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছিল। গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে তাঁর কোনও কাজ নেই। ফলে কিস্তির টাকা তিনি জমা দিতে পারছিলেন না বলে খবর।
কিস্তি না পেয়ে ওই সংস্থার তরফে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল বলে খবর। টাকা দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সেই আবহে আজ সোমবার ওই সংস্থার থেকে কোনও কর্মীর বাড়ি আসার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে। টাকার জোগাড় হয়েছে বলে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন ওই যুবক। এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে এলাকারই একটি দোকানে চা খেতে গিয়েছিলেন ওই যুবক। কিছু সময় পরে স্ত্রী-সন্তানদের সেখানে রেখে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন বলে খবর। তাঁদের বাড়ির পাশেই সুব্রতের শ্বশুরবাড়ি। সেখানে গিয়ে শ্যালকের অনুপস্থিতিতে তাঁর ঘরে ঢুকেছিলেন সুব্রত। পরে সেই ঘর থেকে উদ্ধার হল ঝুলন্ত মৃতদেহ!
পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঋণের কিস্তির টাকা কি তাহলে জোগাড় হয়নি? সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই কি ‘আত্মহত্যা’ করলেন ওই যুবক? সেসব প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।