• তেহরানে আটকে বোমার শব্দে ঘুম নেই ফাল্গুনীর
    আনন্দবাজার | ১৬ জুন ২০২৫
  • হামলা, পাল্টা হামলা চলছে দুই দেশে। বহুতল, জনপদ, তেলের ভান্ডার থেকে প্রাণ— সবই সঙ্কটে। তারই মধ্যে, পর্বতারোহণে গিয়ে ইরানের তেহরানে আটকে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বাসিন্দা, কলকাতার একটি কলেজের শিক্ষক ফাল্গুনী দে। শনিবার দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ইরান-ইজ়রায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আপাতত হোটেলে বন্দি তিনি। সর্বক্ষণ বোমাবাজির শব্দে ঘুম উড়েছে। আউশগ্রামে ছেলের জন্য দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বাবা-মায়ের।

    উত্তর ইরানে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি দামাভান্দ অভিযানে গিয়ে তুষার ঝড়ের কবলে পড়েছিলেন ফাল্গুনী। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গত মঙ্গলবার সেখান থেকে বেসক্যাম্পে ফিরে আসেন। তার পরে পৌঁছন তেহরানে। শুক্রবার বিমান ধরে ওমান, মুম্বই হয়ে কলকাতা ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এখন মধ্য তেহরানে একটি হোটেলে আটকে রয়েছেন বলে ফোনে জানান তিনি। ফাল্গুনী বলেন, ‘‘বেস ক্যাম্প থেকে তেহরানে নেমে আসার পরে দেখি, ভয়ঙ্কর যুদ্ধ পরিস্থিতি। ইরানের আকাশপথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত বিমান বাতিল। হোটেলে কার্যত বন্দি হয়ে আছি। হোটেলের ঘরে বসে ক্রমাগত বোমার শব্দ পাচ্ছি। ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। শনিবার সারা রাত ঘুম হয়নি।’’

    ফাল্গুনী জানান, যে সংস্থার মাধ্যমে তিনি গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে এবং ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তারা অপেক্ষা করতে বলেছে। হোটেল থেকে না বেরোনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে কবে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, সে নিয়ে আশার কথা কেউ শোনাতে পারেননি। ফাল্গুনী বলেন, ‘‘হোটেল, রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। আমার কাছে যা টাকা রয়েছে, তাতে দু’-তিন দিন চলে যাবে। তার পরে কী হবে, বুঝতে পারছি না। বাড়ি থেকে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও, এখানে বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক বন্ধ। টাকা হাতে পাব কী ভাবে, জানি না।’’

    আউশগ্রামে তাঁর বাবা-মা চোখ রেখেছেন টিভির পর্দায়। ফাল্গুনীর বাবা, অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারকর্মী কার্তিকচন্দ্র দে বলেন, “ছেলেটা যখন গিয়েছিল, তখন তো যুদ্ধ পরিস্থিতি ছিল না! খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’’ মা রেবা দে বলেন, ‘‘ছেলে সুস্থ অবস্থায় ঘরে ফিরুক, এখন এটুকুই প্রার্থনা।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)