দীর্ঘ এক দশক অন্ধকারে ডুবে থাকার অবসান। অবশেষে আলো ফিরতে চলেছে সপ্তমুখী সেতুতে। গঙ্গাধরপুরের আঢ্যবাজারে গোবদিয়া নদীর উপরে এই সেতুতে আলোর ব্যবস্থা করতে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর থেকে প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সমীরকুমার জানা বলেন, ‘‘আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে। আশা করছি, বর্ষার আগেই কাজ শুরু হবে।’’
সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে ২০১১-১২ সালে পাথরপ্রতিমা ও কাকদ্বীপ ব্লকের সংযোগকারী এই সেতুটি তৈরি হয়। খরচ হয়েছিল প্রায় ২৪ কোটি টাকা। সেতুর গায়ে আলো না থাকায় রাত নামলেই আঁধারে ডুবে যেত সেতুটি। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, অন্ধকার থাকায় সেতুতে অসামাজিক কাজকর্ম চলত অবাধে। বেড়েছিল দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও। সন্ধের পরে সাধারণ মানুষ তো বটেই, পড়াশোনা করে ফেরার পথে ছাত্রীদের কটূক্তির মুখে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিছু দিন আগে এক মহিলার বস্তাবন্দি দেহও উদ্ধার হয় সেতুর নীচে। সব মিলিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা এলাকায়।
শেষমেশ আলোর আশ্বাসে আশাবাদী এলাকাবাসী। পর্ষদ সূত্রের খবর, সেতুতে বসানো হবে সৌর আলো। হবে মেরামতি। রং করে সাজানোও হবে সেতুকে। দুর্ঘটনা এড়াতে ও গাড়ি পড়ে যাওয়া রুখতে সেতুর দু’দিকের রাস্তায় লাগানো হবে লোহার রেলিং। ইতিমধ্যেই ওই কাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। ১৯ জুন টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতু তৈরির সময়ে সৌরবিদ্যুতের আলো বসানো হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কিছু দিনের মধ্যেই সৌর প্যানেল ও ব্যাটারি চুরি হয়ে যায়। বর্তমানে সেতুর ২০টি খুঁটির একটিতেও নেই আলো। কয়েকটি স্তম্ভে পড়ে রয়েছে শুধু সৌরবাতির ভেঙে পড়া অংশবিশেষ। স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় জানা বললেন, ‘‘আলো জ্বললে সন্ধের পরে আর অসামাজিক কাজ হবে না। তবে আলো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করতে হবে।’’ কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ওই এলাকায় নিয়মিত টহলদারি চলে পুলিশের। অসামাজিক কিছু ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’