উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বিক্ষোভের জের, ডাক্তার দেখাতে পারলেন না বহু রোগী
বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঠিকাদার নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। এখনও মে মাসের বেতন পাননি তাঁরা। সোমবার বেলা ১২টা থেকে এক ঘণ্টার জন্য অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয় হাসপাতালে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের সামনে। আন্দোলনের জেরে সুপার স্পেশালিটি ব্লকে রোগী পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তা এবং আউটডোরের টিকিট কাউন্টারেরও দায়িত্বে এই এজেন্সির কর্মীরা রয়েছেন। তাঁরা কাজ বন্ধ রেখে অবস্থানে বসায় এক ঘণ্টারও বেশি টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকে। ফলে বহু রোগী এদিন ডাক্তার না দেখিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রান হন। তাঁদেরও অনেকে শেষ পর্যন্ত ডাক্তার দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ।
ঠিকাদার সংস্থার চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের আন্দোলনের জেরে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় অসন্তোষ দেখা দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভালোচোখে দেখছে না। হাসপাতাল সুপার তথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। এতে আমরাও বেদনাহত। তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের পরিষেবাকে ব্যাহত করে কোনও আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না। শুধু আমাদের এখানেই নয়, অন্যান্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এজেন্সির কর্মীদের বেতনও বন্ধ রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে জানিয়ে দিয়েছি, আন্দোলন হোক, তবে আউটডোর চলাকালীন নয়। আউটডোর শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ বেলা ২টোর পর আন্দোলন করলে আমাদের অসুবিধা নেই। তারআগে আন্দোলন করে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত করলে আমাদের চরম ব্যবস্থা নিতে হবে। এদিকে, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের এই আন্দোলনের নেত্রী প্রতিমা চক্রবর্তী বলেন, এই হাসপাতালের একটি এজেন্সির চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের গতমাসের বেতন এখনও হয়নি। প্রতিমাসেই দেরিতে বেতন হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। এই বেতনে সকলের সংসার চলে। কারও স্বামীর ওষুধ, কারও বা ছেলেমেয়ের পড়াশুনার খরচ চলছে। এভাবে বেতন বন্ধ করে কাজ করালে এটা মেনে নেওয়া হবে না। এভাবে বেতন বন্ধের পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করে প্রতিমা বলেন, বেতন বন্ধের কারণ হিসেবে এজেন্সির তরফে বলা হচ্ছে সরকার টাকা দিচ্ছে না। এটা আমরা বিশ্বাস করি না। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। রাজ্যের তৃণমূল সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে নানারকম প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকছে। সেখানে এই সামান্য ক’জন কর্মীর বেতন আটকে রাখবে তৃণমূল সরকার, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। তা না হলে এভাবে কর্মী নেওয়া হচ্ছে কেন। এখনও অনেককে কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সরকার চুক্তি মতো টাকা না দিলে এজেন্সি ক্রমাগত লোক নিয়োগ করছে কীভাবে?