• এবার জলদাপাড়া ও গোরুমারায় গন্ডার প্রজননে জিনগত বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগ
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ও গোরুমারা অভয়ারণ্যের একশৃঙ্গ গন্ডার সম জিনভুক্ত। তাই দুই বনাঞ্চলের সম জিনের গন্ডারদের প্রজননে জিনগত বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য বনদপ্তর। সেই লক্ষ্যে গবেষণার কাজ শুরু করছে রাজ্য বনদপ্তর। ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় এই গবেষণা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেজন্য জলদাপাড়া ও গোরুমারার মধ্যে গন্ডার আদান প্রদানেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, ভবিষ্যতে জলদাপাড়ায় গন্ডারের চাপ কমানোরও উদ্যোগ নিয়েছে বনদপ্তর। তার জন্য গন্ডারদের নতুন আবাসস্থল হিসেবে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমাতির জঙ্গলে তৃণভূমি গড়ে তোলার কাজ শুরু করে দিয়েছে বনদপ্তর। 

    কিন্তু গন্ডারদের প্রজননে কেন জিনগত বৈচিত্র্য আনার এই প্রয়াস বনদপ্তরের? বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরের পর বছর ধরে রাজ্যের এই দুই বনাঞ্চলে সম জিনভুক্ত গন্ডারদের প্রজনন চলছে। ভবিষ্যতে যা সমস্যা ডেকে আনতে পারে। বছরের পর বছর ধরে সম জিনগত প্রজননে নানান সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তার জন্যই এশিয়ান রাইনো গ্রুপের চেয়ারম্যান বিভব তালুকদার ও অন্যান্য গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই রাজ্য বনদপ্তর গন্ডারদের সম জিনগত প্রজননে বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে। 

    শেষ গন্ডার শুমারীতে গোরুমারায় ৬১টি ও জলদাপাড়ায় ৩৩১টি গন্ডারের হদিশ মিলেছে। কিন্তু গন্ডার বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে গোরুমারা ও জলদাপাড়া দুই বনাঞ্চলে পুরুষ ও স্ত্রী গন্ডারের আনুপাতিক হার প্রায় সমান সমান। অথচ একটি পুরুষ গন্ডার প্রতি তিনটি স্ত্রী গন্ডার থাকা দরকার। রাজ্যের দুই বনাঞ্চলে গন্ডারদের এই লিঙ্গের পরিসংখ্যান ভাবিয়ে তুলেছে বিশেষজ্ঞদের। সেই সমস্যা মেটাতে গন্ডারদের প্রজননে জিনগত বৈচিত্র্য আনার উদ্দেশ্যে রাজ্য বনদপ্তর এই গবেষণা শুরু করল। রাজ্য বনদপ্তর ‘প্রজেক্ট রাইনো’ গঠন করে বিজ্ঞানভিত্তিক এই গবেষণার কাজ শুরু করেছে।

    এশিয়ান রাইনো গ্রুপের চেয়ারম্যান বিভব তালুকদার বলেন, বছরের পর বছর ধরে সম জিনে গন্ডারদের প্রজননে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার জন্যই রাজ্য বনদপ্তরকে গোরুমারা ও জলদাপাড়ার গন্ডারদের সম জিনভুক্ত প্রজননে বৈচিত্র্য আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ বনদপ্তর সেই কাজ শুরু করেছে। রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, গোরুমারা ও জলদাপাড়ায় সম জিনভুক্ত গন্ডারদের প্রজননে জিনগত বৈচিত্র্য আনার জন্য বিজ্ঞান ভিত্তিক সমীক্ষা শুরু হয়েছে। ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার সমীক্ষার অপেক্ষায় আছি আমরা। তার জন্য গোরুমারা ও জলদাপাড়ার মধ্যে গন্ডার আদানপ্রদান হবে।  জলদাপাড়ায় একশৃঙ্গ গন্ডার। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)