সংবাদদাতা, মালদহ: পাঁচ শতাব্দীরও বেশি পুরনো রামকেলি মেলায় উপচে পড়ছে ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের ভিড়। আর এই ভিড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পকেট ভরাতে রামকেলিতে হাজির ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতী গ্যাং। শুধু পুরুষ নয় ভিনরাজ্যের অনেক মহিলা হাত সাফাইকারীদেরও এখন গন্তব্য চৈতন্য মহাপ্রভুর পদধূলি ধন্য রামকেলি ধাম। তাদের সঙ্গেই শামিল মালদহের প্রমীলা দুষ্কৃতীরাও। এমনই এক বড় গ্যাংকে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করেছে ইংলিশবাজার থানার পুলিস। পকেটমার এবং কেপমারদের হাত থেকে পুণ্যার্থীদের রেহাই দিতে রামকেলি মেলা প্রাঙ্গণে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিস আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, ১৫১৫ খ্রিস্টাব্দে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের গৌড়ভূমিতে পদার্পণ উপলক্ষ্যে এই রামকেলি মেলা শুরু হয়েছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারত, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মধ্যভারত থেকে অসংখ্য বৈষ্ণব ভাবধারার মানুষ এই মেলায় অংশ নিতে আসে। এমনকী নেপাল বাংলাদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন। তাঁদের পকেট কাটতেই মেলায় হাজির হয় দুষ্কৃতীরাও। জেলা পুলিসের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, রবিবার সন্ধ্যার আগে আমরা খবর পাই রামকেলি মেলা প্রাঙ্গণে একটি মহিলা পকেটমার গ্যাং হাজির হয়েছে। সময় নষ্ট না করে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছই এবং গ্যাংটিকে গ্রেপ্তার করতে সফল হই। গ্যাংটিতে ১১ জন মহিলা রয়েছে। তাদের অধিকাংশই ঝাড়খণ্ডের কুখ্যাত জামতাড়ার বাসিন্দা। আমরা তাদের গ্রেপ্তার করে আদলতে পাঠিয়েছি। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা বসমাতি দেবী, শোভাদেবী, রুকসানা দেবী, জয়মান্তি দেবী, রিনা দেবী, কিসমিস দেবী, তমালি বেদ জামতাড়ার বাসিন্দা। তাদের সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বর্ধমানের মনি বেদ, বিহারের কমলাদেবী এবং মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দুই বাসিন্দা সখিনা বেদ ও আইয়া বেদকে। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করল তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। দলের নেতৃত্বে কে ছিল তাও জানার চেষ্টা চলছে বলে পুলিস জানিয়েছে।
জেলা পুলিসের আধিকারিকদের বক্তব্য, রামকেলি মেলায় এসে অনেক ভক্তই পুণ্যার্জনের উদ্দেশ্যে দান করেন। শাড়ির আঁচল, ধুতির কোচর, কখনও আবার প্যান্টের পকেট কেটে পুণ্য অর্জনের জন্য সঞ্চিত টাকা হাপিস করে দেয় এই কেপমাররা। মহিলা বলে তাদের সহজে কেউ সন্দেহও করেন না। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, আমরা মেলা প্রাঙ্গণে কড়া নজরদারি চালাচ্ছি।