• প্রেমিকের বাড়িতে হামলা প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের, যুবকের কাকার মৃত্যু, জখম ১১, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় প্রেমিকের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালানোর অভিযাগে উঠল প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। অস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষের তুমুল মারামারিতে মৃত্যু হল প্রেমিকের কাকার। ঘটনায় দু’পক্ষের প্রায় ১২ জন জখম হয়েছেন। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে মুরারইয়ের কাশিমনগর গ্রামে। পুলিস জানিয়েছে, দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। 

    গ্রাম ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশিমনগর গ্রামের যুবক আলি হোসেনের সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবতীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁদের মধ্যে মোবাইলে কথাবার্তা হতো। এই নিয়ে দুই পরিবারে গণ্ডগোল চলছিল। গত ৮ জুন, ঈদের পরদিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ যুবতীকে ওই যুবকের বাড়ি পাঠায়। যদিও সেই সময় যুবকের মা জেলেখা বিবি ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিলেন না। জেলেখা ওই যুবতীকে বলেন, ‘বাড়িতে ঢোকা যাবে না। ছেলে বাড়িতে নেই। এখন যাও।’ যুবতীর পরিবার বাড়ির ছাদ থেকে সেসব লক্ষ্য রাখছিল। এরই মধ্যে যুবক ও তাঁর পরিবার বাড়িতে ফেরে। অভিযোগ, সেই সময় যুবতীর পরিবারের সদস্যরা আলি হোসেনকে খুন করার উদ্দেশ্যে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ধারালো চাকু নিয়ে অতর্কিতে হামলা করে। যুবকের পেটে, মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। বাধা দিতে এলে যুবকের ভাই, তাঁর দুই কাকা ও এক খুড়তুতো ভাই একইভাবে জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁরা। পরে তাঁদের আরও আত্মীয়স্বজন দৌড়ে আসলে পালিয়ে যায় যুবতীর পরিবার। পরে জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর মধ্যে একজনকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। এদিকে রামপুরহাট মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রবিবার রাত একটা নাগাদ মৃত্যু হয় প্রেমিকের কাকা সারজেন শেখের (৩২)। এদিকে মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

    মৃতের ভাইপো রুবেল শেখ বলেন, ‘আলি হোসেনের সঙ্গে ওই যুবতীর আগে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এখন ওই যুবতীকে জোর করে আমাদের বাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিল তাঁর পরিবার। সেই নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। যুবতীর পরিবার চাকু নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে আমাদের কয়েকজনকে জখম করে। তাতেই এক কাকার মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার রাতেই মুরারই থানায় আটজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিস তাঁদের ধরতে গ্রামে আসলেও অভিযুক্তরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। কাকা মারা যাওয়ার পর থেকে তারা সকলেই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে।’ 

    এঘটনায় এক অভিযুক্ত প্রেমিকার মামা সাদ্দাম শেখকে ফোন করা হলে তাঁর স্ত্রী আফিয়া খাতুন কল রিসিভ করে বলেন, ‘স্বামী নেই। আমিও যোগাযোগ করতে পারছি না। বাড়িতে ফোন রেখে চলে গিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘ওরা আমাদেরও কয়েকজনকে মারধর করে। তার মধ্যে একজনের মাথায় আঘাত লেগেছে।’ পুলিস জানিয়েছে, দুই পরিবারের মারামারির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষই জখম হয়েছিলেন। ঘটনার তদন্তর পাশাপাশি অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)