• দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ টোটো চালক
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কালিয়াচক: মালদহের কালিয়াচকের মোজমপুরে ফের চলল গুলি। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ টোটোতে আমবোঝাই করে নিয়ে আসার পথে গুলিবিদ্ধ হন আমির শেখ নামে এক টোটো চালক। তাঁর বাড়ি কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির অন্তর্গত পিরপাড়া এলাকায়। বর্তমানে তিনি মালদহ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে বিপদ এখনও কাটেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য, ১৫ দিন আগেও লিচুবাগান পাহারা দেওয়ার সময় এক যুবককে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। যদিও ওই ঘটনায় পুলিস বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে তারা জেলবন্দি রয়েছে। কিন্তু রবিবার রাতে ফের গুলি চলায় স্বাভাবিকভাবেই অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গোটা মোজমপুর এলাকা জুড়ে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোজমপুরের ত্রাস আসাদুল বিশ্বাস গোষ্ঠীর সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকার দখলকে কেন্দ্র করে বচসা চলছে এনারুল শেখের গোষ্ঠীর। বর্তমানে বর্ষীয়ান আসাদুলের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। এদিকে এনারুলের প্রভাব যথেষ্টই বেড়েছে এলাকায়। ধীরে ধীরে সে মোজমপুরের ‘বাহুবলী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। গত কয়েক মাসে এলাকায় চারটি শুট আউটের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আসাদুল গোষ্ঠীর চানু শেখ গতকাল রাতে এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় এনারুল গোষ্ঠীর কয়েকজনকে দেখতে পেয়ে সে গালিগালাজ করতে শুরু করে। এরপরেই দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বচসা শুরু হয়ে যায়। তখনই চানু কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি বের করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। সেসময় টোটো চালক আমির টোটো নিয়ে কালিয়াচকের দিকে আসছিল। তখনই একটি গুলি তাঁর বুকে লাগে।

    আমিরের বাবা নজরুল শেখ বলেন, আমার ছেলে বেশ কয়েক বছর ধরে টোটো চালায়। সেই আমাদের বাড়ির একমাত্র রোজগার করে। আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ায় কোন‌ও কাজ করতে পারি না। তাই অনেক সময় রাত হলেও আমার ছেলে আমিরকে একটু বেশি রোজগারের আশায় টোটো চালাতে হয়। আমার ছেলে রবিবার রাতে আম নিয়ে কালিয়াচক যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় কেউ বা কারা তাকে গুলি করে। ছেলে নিজেই ফোনে বিষয়টি আমাদের জানায়। এমনকী তাকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেনি। তার ফোন পাওয়া মাত্রই আমার ভাইপোরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু একটু ভালো চিকিৎসার আশায় আমরা তাকে মালদহ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখনও ছেলের সঙ্কট কাটেনি। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিস কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিস জানিয়েছে, জখম যুবকের বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)