নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে রোগীর পরিজনদের বেহুঁশ করে স্মার্ট ফোন ও টাকা চুরির অভিযোগ উঠল আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত তিনদিন ধরে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে ভাব জমিয়েছিল। রবিবার ভোরে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রতারিতরা সোমবার আরামবাগ থানায় অভিযোগ জানান। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। হাসপাতালে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা। ঘটনার তদন্ত করে মোবাইল ও টাকা ফেরতের আর্জি জানিয়েছেন রোগীর পরিজনরা। পাশাপাশি অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবিতেও তাঁরা সরব হয়েছেন। এদিকে সোমবার সকাল থেকে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন দুই মহিলা। বমি হতে থাকে। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায় বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে বলেছি। হুগলি গ্রামীণ পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরশুড়ার কোটালপাড়ার বাসিন্দা শেফালী রোজার স্বামী আরামবাগ মেডিক্যালে ভর্তি। তাঁর সঙ্গে তাঁর বিবাহিত মেয়ে সুস্মিতা ঘোড়ুইও ছিলেন। শেফালীদেবী বলেন, রবিবার রাতে আমাদের ঠান্ডা পানীয় খেতে বলে ওই ব্যক্তি। সে জানায়, তা আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমরা সরল বিশ্বাসে ঠান্ডা পানীয় খেয়ে ফেলি। তার কিছু সময় পর ঘুমিয়ে পড়ি। ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি মোবাইল ও টাকা নেই। আমাদের কাছে থাকা তিনটি স্মার্ট ফোন ও প্রায় ১৩ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে। সুস্মিতাদেবীর স্বামী সুমিত ঘোড়ুই বলেন, স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ি নিয়ে এসেছি।
খানাকুলের ঠাকুরানীচকের বাসিন্দা সঞ্জয় খাঁও এইভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বাবাও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি রবিবার সন্ধ্যায় চা নিয়ে এসে খাওয়ায়। রাতে ঠান্ডা পানীয়ও নিয়ে আসে। অমি খেতে চাইনি বলে বারবার পা ধরে অনুরোধ করতে থাকে। তখন বাধ্য হয়ে ওই পানীয় খেয়েছিলাম। কিছু সময় পর ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু কোনও সন্দেহ হয়নি। কারণ গত দু’ দিন ধরে পরিচয় হয়েছিল। সকালে উঠে দেখি পকেটে থাকা মোবাইল, প্রায় পাঁচ হাজার টাকা ও ইয়ার ফোন নেই।
খানাকুলের নিরঞ্জনবাটির বাসিন্দা এক রোগীর আত্মীয় শ্যামল ভৌমিক বলেন, ভোর রাতে বউমাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তখন দেখি রোগীর ওই পরিজনরা টাকা মোবাইল হারিয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। হাসপাতালে গরিব মানুষ চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন। প্রত্যেকেরই মানসিক অবস্থা বিধ্বস্ত থাকে। এই পরিস্থিতিতে দুষ্কৃতীরা এইভাবে চুরি করলে প্রত্যেককেই সমস্যায় পড়তে হবে। এই ঘটনার পর থেকে আমরা প্রত্যেকেই আতঙ্কে রয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিস এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করুক।