• দিদির পচাগলা মৃতদেহ দু’দিন ধরে আগলে বসে ভাই-বোন, রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার কসবায়!
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঠিক যেন রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া! কসবায় দিদির মৃতদেহ দু’দিন ধরে বাড়িতেই আগলে রেখেছিলেন ভাই-বোন। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। লালবাজার সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। 

    কসবার ৪২ নম্বর পরেশ মজুমদার রোডের তিনতলা বাড়ির দোতলায় থাকতেন সাতাত্তর বছরের বৃদ্ধা পূরবী নস্কর। একইসঙ্গে থাকেন তাঁর এক ভাই ও এক বোন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, তিন ভাইবোনের কেউই বিয়ে করেননি। দিন দুয়েক আগে বাড়িতেই হঠাৎ মারা যান পূরবীদেবী। তারপর থেকেই তাঁর দেহ আগলে বসে রয়েছেন দুই ভাই-বোন। এমনকী, দিদির মৃত্যুর খবর পর্যন্ত কাউকে জানাননি তাঁরা।

    কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানাচ্ছে, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ পরিচারিকা কাজে এলে তিনি পূরবীদেবীর মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। ততক্ষণে মৃতদেহে পচন ধরেছে। মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করেছে। ওই পরিচারিকার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন প্রতিবেশীরা। স্থানীয় বাসিন্দারাই খবর দেন কসবা থানায়। ঘটনাস্থলে আসে কসবা থানার পুলিস। ফ্ল্যাটে ঢুকে পুলিস দেখে, মেঝেতেই মহিলার পচাগলা মৃতদেহ শোয়ানো অবস্থায় রয়েছে। পূরবীদেবীর দেহটি উদ্ধার করে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    ২০১৫ সালে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকার ৩ নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের বাড়ির বাথরুম থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখে পুলিস যায়। তখন বাড়ির মালিক পার্থ দে’র ঘর থেকে তাঁর দিদির কঙ্কাল ও দুই পোষ্য কুকুরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল কলকাতা তথা দেশজুড়ে। 

    কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানাচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। প্রাথমিক তদন্তে পূরবীদেবীর মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। চিকিৎসকদের অনুমান, খুব সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। 
  • Link to this news (বর্তমান)