• খিদিরপুরের দগ্ধ বাজারে হবে আধুনিক মার্কেট, ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির তোড়জোড়
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ মার্কেট। বাজারের বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। কতগুলি দোকানের ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক হিসেব পাওয়া  যায়নি। তবে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ দোকান পুড়ে গিয়েছে বলে অনুমান। সেখানে আধুনিক মার্কেট কমপ্লেক্স বানিয়ে দেওয়া হবে বলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু করা হয়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা হবে। কোনও ব্যক্তির নামে কতগুলি দোকান রয়েছে। কতগুলি পুড়েছে। তার তালিকা তৈরি হবে। অন্যদিকে পুরসভার বাজারে কেন অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

    খিদিরপুরে আদি গঙ্গার পাশে প্রায় ৫৫ কাঠা জায়গা নিয়ে অরফ্যানগঞ্জ বাজার গড়ে উঠেছে। পুরসভা সূত্রে খবর, কয়েক দশক ধরে সেচদপ্তরের জমিতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাজার তৈরি হচ্ছিল। তা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দপ্তরের অধীনে ছিল। পরে বাজারের সংস্কার, সেখানকার রাস্তাঘাট থেকে নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ যাবতীয় কাজ পরিচালনার জন্য অরফ্যানগঞ্জ মার্কেট ২০২২ সালে কলকাতা পুরসভার আওতায় আসে। তারপর সংস্কারের কাজ হয়। তবে অভিযোগ, সে কাজ পর্যাপ্ত নয়। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে থাকা বাজারটিতে রয়েছে এক হাজার ৩১১টি দোকান। তার বেশিরভাগের ছাউনি টিন এবং প্লাস্টিকের। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এদিনের ঘটনায় কমবেশি ৭০০ দোকান পুড়েছে। যদিও এ সংখ্যা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রায় হাজারেরও বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। মেয়র জানান, কতগুলি দোকান ছিল, কার নামে দোকান, কতগুলি ক্ষতিগ্রস্ত, তার প্রকৃত হিসেব হবে। বাজার বিভাগকে বলেছি, সব ব্যবসায়ীর থেকে কাগজপত্র নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স সহ অন্যান্য নথিপত্র খতিয়ে দেখতে। সেই অনুসারে সার্ভে করে তৈরি হবে ব্যবসায়ীয়েদের তালিকা। আপাতত পাশের একটি খালি জমিতে অস্থায়ী বাজার তৈরির ব্যবস্থা হবে। আর আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সহ মার্কেট বানিয়ে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। 

    পুরসভা সূত্রে খবর, খিদিরপুরের এই বিশাল জমিতে মার্কেটের পাশে একটি খাটাল ছিল। সেটি কয়েক বছর আগে সরানো হয়েছে। সেই ফাঁকা জায়গায় আদি গঙ্গার পাড়ে থাকা বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। এর বাইরেও একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা আছে পুর কর্তৃপক্ষের। আপাতত ফাঁকা জায়গাটিতে পুড়ে যাওয়া মার্কেটের ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী দোকান করে দেওয়া হবে। 

    নতুন বাজার তৈরি হলে পুরসভার অন্যান্য পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার দেবলীনা বিশ্বাস বলেন, ‘বাজারটি পুরসভার হাতে আসার পর অনেক ব্যবসায়ী কাগজপত্র জমা করে পুরসভা থেকে ট্যাক্সের বিল নিয়েছেন। অনেকে এখনও পর্যন্ত নথিপত্র জমা করেননি। এবার সেগুলি চাওয়া হচ্ছে। সব জমা পড়লে সেই অনুযায়ী সার্ভের কাজ করে পুনর্বাসন প্রাপকদের তালিকা তৈরি হবে।’ - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)