রবীন্দ্র সরোবরে নাবালকের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসল কেএমডিএ, আজ বৈঠক
বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবীন্দ্র সরোবরে একজন কিশোরের জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় লেকের পাবলিক সুইমিং পুল সংস্কার সহ সাঁতারুদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশপ্রেমী থেকে শুরু করে প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, সরোবরে যে কেউ এসে জলে নেমে যাচ্ছে। কেউ দেখার নেই। কোনও বিধি-নিষেধ বা নিয়ন্ত্রণও নেই। লেকের পাবলিক সুইমিং পুলে রেলিং ঘেরা জায়গাটি বহুদিন সংস্কার করা হয়নি। যার জেরে যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁরা রেলিংয়ের বাইরে গিয়ে সাঁতার কাটতে বাধ্য হন। পাশাপাশি, এই পাবলিক পুলের জন্য অবিলম্বে লাইফ সেভার নিয়োগের দাবি উঠেছে। সরোবর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ জানাচ্ছে, এই ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত। কিন্তু যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁরা কেন জলে নামছেন! যদিও লাইফ সেভার নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে নীতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে বলে কেএমডিএ সূত্রে খবর।
আজ, মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা। যেখানে উপস্থিত থাকবেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সোমবার বিকেলে লেকের বাইরে মৃতের প্রতি মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান সবুজ মঞ্চের সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁরা রবীন্দ্র সরোবর থানাতেও যান। ঘটনার পর আপাতত ১০ থেকে ১৫ দিন পাবলিক পুলে স্নান করা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকালে রবীন্দ্র সরোবরের পাবলিক পুলে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মারা যায় এক কিশোর। তারপরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পরিবেশপ্রেমী থেকে শুরু করে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের অভিযোগ, পাবলিক পুলের যে অংশ রেলিং দিয়ে ঘেরা, যেখানে যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁরাই নামতে পারেন, সেই জায়গাটির সিঁড়ি ভাঙা, পিছল। পলি জমে গভীরতা কমে গিয়ে স্নান করার অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘকাল সংস্কার হয়নি। যার জেরে অনেকেই রেলিংয়ের বাইরে গিয়ে স্নান করতে বাধ্য হন। পরিবেশকর্মী সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন, যে কেউ এসে সরোবরের জলে নামতে পারবেন না। তার জন্য কিছু নিয়মাবলী পালন করতে হবে। যাঁরা সাঁতার কাটতে নামবেন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন। তাহলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।
এ প্রসঙ্গে কেএমডিএর এক কর্তা বলেন, যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁরা কেন জলে নামবেন, এটা ভেবেই তো অবাক হচ্ছি! রেলিংয়ের যে অংশ সাঁতারের অযোগ্য, সেই জায়গাটি সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে গিয়েছে। পাবলিক পুলে নিয়মিত ৪০০-৫০০ জন স্নান করতে আসেন। ওভাবে কাউকে আটকানো সম্ভব নয়।
লাইক সেভার কেন নিয়োগ করা হল না? সূত্রের খবর, এই লেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত একজন লাইভ সেভার ছিলেন। তাঁর অবসরের পর নতুন করে আর কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। এই বিষয়ে ওই কর্তা বলেন, এক সময় সরোবর কেআইটির অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে কেআইটি এবং কেএমডিএ মিশে যাওয়ায় এই ধরনের বেশ কিছু পদ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। তাই লোক নেওয়া যায়নি। মঙ্গলবার মন্ত্রীর সঙ্গে এনিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা। ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে। - নিজস্ব চিত্র