• বাস ধর্মঘটের জেরে চরম দুর্ভোগ আরামবাগে, বৈঠকে মিলল সমাধানসূত্র, আজ থেকে রাস্তায় বাস
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: সোমবার আরামবাগ মহকুমায় একটিও বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি। বাস ধর্মঘটের জেরে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় যাত্রীদের। ভিড়ে ঠাসা অবস্থায় এসবিএসটিসি বাসে চেপে অনেকে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ বেশি ভাড়া গুনে বিকল্প গাড়িতে যাতায়াত করেন। সপ্তাহের কাজের প্রথমদিন হওয়ায় দুর্ভোগ চরমে ওঠে। তবে স্বস্তি বলতে এটাই, এদিনই চুঁচুড়ায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বাস মালিক সংগঠনের বৈঠকে রফা সূত্র মিলেছে। তার জেরে আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের স্বাভাবিক চলাচল করবে বেসরকারি বাস। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বাস মালিক সংগঠনের অভিযোগ শোনা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরামবাগের বাস মিনিবাস অপারেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদিকা মধুমিতা ভট্টাচার্য বলেন, এদিন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। প্রশাসন রাজ্য সড়কের উপর অবৈধভাবে চলাচল করা অটো, টোটো, ট্রেকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। আমরা ১০ দিন দেখব। সমস্যার সমাধান না হলে আমরা ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস বন্ধ করব। তবে মঙ্গলবার থেকে বাস চলবে। 

    প্রসঙ্গত, অবৈধ অটো, টোটো, ম্যাজিক, ট্রেকার নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মালিক সংগঠন। তার ভিত্তিতে এদিন সকাল থেকে বেসরকারি বাস রাস্তায় দেখা যায়নি। শুনশান ছিল আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড। দু’-একটি বাস পার্ক করে রাখা ছিল। হকার বা বাসকর্মীদের কর্ম ব্যস্ততা ছিল না। এমনকী, ভিন জেলা থেকেও এদিন কোনও বাস আরামবাগে ঢোকেনি। ধর্মঘটের জেরে সপ্তাহের প্রথম দিনে নিত্যযাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বেসরকারি বাস না থাকায় তাঁরা এসবিএসটিসি স্ট্যান্ডে যান। সেখানে বাসগুলিতে গরমের মধ্যে ঠাসা ভিড়ে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। ধর্মঘটের কথা যাঁরা জানতেন না, তাঁরা আরামবাগে এসে বিপাকে পড়েন। তারফলে অটো, টোটো, চারচাকা গাড়িতে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তাঁদের গন্তব্যে যাতায়াত করতে হয়। বর্ধমানের উচালনের বাসিন্দা জেসমিন পারভিন হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট নিতে আরামবাগে আসেন। আরামবাগ বর্ধমানের সীমানা বুলচাঁদ পর্যন্ত তিনি বাসে আসেন। পরে সেখান থেকে টোটোয় ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে আরামবাগ শহরে আসেন। কিন্তু, ফিরে যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকেন দীর্ঘ সময়। তিনি বলেন, ধর্মঘটের কথা জানা ছিল না। এসে বিপাকে পড়তে হল। আরামবাগের বাসিন্দা পরেশচন্দ্র রায় বলেন, চাকরি সূত্রে খানাকুলে প্রতিদিন যেতে হয়। এদিন ধর্মঘটের কথা জানতাম। শেয়ার করে কোনও গাড়িতে যাওয়া যায় কি না দেখছি। বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে অফিসে ঢোকার নিয়ম। বাস নেই। এসবিএসটিসি পেলেও সময় মতো ঢুকতে পারব না। এরকম পরিস্থিতির বদল হওয়া দরকার।

    তবে অনেকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েও টোটো ও অটোর দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে সরব হন। টোটোর দৌরাত্ম্যে লাইনের বাসগুলি উঠে গেলে সমস্যা আরও বাড়বে বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপ দাবি করেন।
  • Link to this news (বর্তমান)