• ওবিসি তালিকায় সোমবার স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্ট, সিদ্ধান্ত হবে আজ, বিধানসভায় বিরোধীদের পাল্টা দিলেন মমতা
    বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্য সরকারের ওবিসি তালিকা প্রকাশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় সোমবার স্থগিতাদেশের কোনও অর্ডার জারি করল না হাইকোর্ট। তবে, আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এ নিয়ে নির্দেশ দিতে চলেছেন। সোমবার এ নিয়ে হওয়া শুনানিতে রাজ্যের বক্তব্য শোনেন তিনি। তারপরই তিনি মঙ্গলবার এ বিষয়ে তাঁর রায় দেবেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

    বিচারপতি রাজ্যের পদক্ষেপে খুব একটা সন্তুষ্ট নন বলেই এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিধানসভায় বিল আকারে পাশ করার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য তা না করে প্রশাসনিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিজেদের সিদ্ধান্তে মান্যতা দিয়েছে। রাজ্য নিজের মতো করে যদি কাজ করে তাহলে কোর্ট প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হবে।’ যদিও অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ‘ভর্তির বিষয়টি আটকে গিয়েছে। পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়েছেন। আমাদের সেদিকটাও নজর দিতে হচ্ছে।’ বিচারপতি বলেন, ‘আমরা নিয়োগ বা ভর্তি কোথাও বন্ধ করতে বলিনি।’ এতেই কিছুটা আশার আলো দেখছে রাজ্য সরকার। তবে বিচারপতি মনে করিয়ে দেন, ‘রাজ্যের গোটা লোকসংখ্যার প্রেক্ষিতে সমীক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়েছে কিনা, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা ৬৬টি সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করতে পারেন। সেখানে হস্তক্ষেপ করছি না। কিন্তু আপনারা নিজেদের মতো নিয়োগের চেষ্টা করে বিষয়টি জটিল করছেন। কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন, তা আপনারাই আগে বলেছিলেন। বাস্তবে তা হচ্ছেনা।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘রাজ্য হাইকোর্টের নির্দেশ পালনে কেন উদাসীন? কেন ৬৬টি সম্প্রদায়কে নিয়ে রাজ্য এগচ্ছে না? আপনারা নিজেদের কথার খেলাপ করছেন।’

    অপরদিকে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে সোমবার বিধানসভায় বিরোধীদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, শুধু মুসলিমদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই ওবিসির নতুন তালিকা করা হয়েছে। এই দাবি যে সর্বৈব মিথ্যা, তা সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইশাই সবাইকে নিয়ে চলতে হয় আমাদের। ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বিরোধীদের ব্যাখ্যা বিভ্রান্তিকর। ওবিসি মানে শুধু মুসলিম নয়। তালিকায় ১৪০টি শ্রেণির মধ্যে ৮০টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। বাকি ৬০টি শ্রেণি সংখ্যালঘু নয়। অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনের সুপারিশ মেনেই এই তালিকা তৈরি হয়েছে। বিধানসভায় তা পাশ হয়েছে এবং বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আশাকরি, এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনও জায়গা নেই।’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ। দেশভাগের সময় থেকেই নানা সংরক্ষণ ব্যবস্থা চলছে। এটা নতুন নয়। তবে, সংখ্যালঘুদের খেতে দেব না, এই ভাবনাও ঠিক নয়। তিনি জানান, নয়া তালিকা ঘিরে অনেক সংখ্যালঘুও বঞ্চনার অভিযোগ করছেন। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হবে। বিরোধীদের অপপ্রচার নিয়ে বিধায়কদের নিজের এলাকায় প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
  • Link to this news (বর্তমান)