২০২৬ সালে বিজেপি ‘শূন্য’ হবে, দাবি তৃণমূল সুপ্রিমোর
বর্তমান | ১৭ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ৭৭টি আসন জিতে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পাঁচ বছর বাদে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি তার জেতা আসনই ধরে রাখতে পারবে না, সেই ভবিষ্যৎবাণী করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভার ভরা অধিবেশনে দাঁড়িয়ে মমতার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ২০২৬ সালে বিজেপি শূন্য হয়ে যাবে।
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার প্রস্তুতিও রাজনৈতিকভাবে শুরু করে দিয়েছে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে তৃণমূল এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে গত ১৬ মে সাংগঠনিক রদবদল একপ্রস্থ সেরে ফেলেছে জোড়াফুল শিবির। আরও কিছু রদবদল হওয়ার কথা রয়েছে। তাছাড়া আগামী ২১ জুলাই তৃণমূলের মেগা সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে ধর্মতলায়। যে সভা থেকে তৃণমূল ছাব্বিশের ভোটের রণকৌশল জানান দেবে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগানে গলা মেলায় তামাম পশ্চিমবঙ্গ। মমতার প্রতি সমর্থন উজাড় করে দিয়ে তৃণমূলকে বিপুল ভোটে জয়ী করেন গ্রাম থেকে শহরের মানুষ। কিন্তু ‘বাংলার মেয়েকেই’ বিজেপি নানাভাবে অপদস্থ করছে বলে অভিযোগ। কুৎসিত মন্তব্য করা থেকেও বিজেপি নেতারা বিরত হচ্ছেন না, এমন অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে সোমবার মমতা বলেন, সারাক্ষণ অসম্মান, অপমান করছেন আমাকে। আমি কী খাব, কী পড়ব ঠিক করে দেবেন নাকি? আমি বিশ্বাস করি, ২০২৬ সালের বিধানসভায় আপনারা (বিজেপি) জিরো (শূন্য) হয়ে যাবেন। এটা মনে রাখবেন, বলে দিয়ে গেলাম!
ঘটনাচক্রে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের একটি আচরণ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, সুকান্তবাবু হাওয়াই চটি ছুঁড়েছেন, সেটি গিয়ে পড়ে একজন নিরাপত্তরক্ষীর পাগড়িতে। অমৃতসর গুরুদ্বার কমিটিও সরব হয়েছে সুকান্তর বিরুদ্ধে। সুকান্তকে উদ্দেশ করে মমতা বলেন, একজন হাফ মিনিস্টার, হাওয়াই চটির ব্যবসা করুন। উনি যদি হাওয়াই চটি এতটাই ভালোবাসেন, তাহলে দোকান করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের মন্ত্রী থাকাকালীন যে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছেন, সেটাও এদিন তিনি জানিয়েছেন। বলেছেন, আমি দু’বার রেলমন্ত্রী ছিলাম। বাজেট পেশ করেছি। আমার বিরুদ্ধে কোনও ফাইল খুঁজে পায়নি। আর আমি দেড় লক্ষ টাকা পেনশন পেতে পারতাম। নিই না। বিধানসভা থেকেও কোনও বেতন নিই না। সার্কিট হাউসে থাকা-খাওয়ার খরচ নিজে দিই। আমার বিরুদ্ধে কুৎসা করার আগে বিজেপি নেতারা সবকিছু জানুক।
অন্যদিকে সেতু ভেঙে পড়া সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যে সাম্প্রতিক ঘটনার প্রসঙ্গগুলি উল্লেখ করেছেন মমতা। যেভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত চিন্তার কারণ। এখানেই কেন্দ্রের উদ্দেশে মমতার কটাক্ষ, ভারতজুড়ে মৃত্যু মিছিল। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। মানুষের জীবন-যৌবন বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ওদের লজ্জা হওয়া উচিত।