• বয়স্কদের পাশাপাশি করোনার কামড় শিশুদেরও, বলছে পরিসংখ্যান
    এই সময় | ১৭ জুন ২০২৫
  • রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের অর্ধেকই বয়সে প্রবীণ। এরপরেই রয়েছে শিশুরা। বলছে পরিসংখ্যান। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউয়েও এই পরিস্থিতি ছিল না। বরং অতিমারী–পর্বে আগাগোড়া দেখা গিয়েছে, একমাত্র শিশুরাই সংক্রমণের কবলে পড়ছে না।

    পড়লেও মৃদু উপসর্গ অথবা উপসর্গহীন থাকছে। কিন্তু চলতি বছরে পরিস্থিতি আলাদা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ জুন পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪৭ জন। আক্রান্তদের ৬১ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব।

    এরপরেই রয়েছে ছোটরা। আক্রান্তদের মধ্যে ২২ শতাংশের বয়স ৩ মাস থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। ৪৮-৬০ মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ শতাংশ মানুষ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছেন প্রবীণরা।

    করোনা আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁদের ৭৮ % প্রবীণ। ৩ মাস থেকে ১৫ বছরের মধ্যে বয়সি ৭ % আক্রান্তকে এ বার ভর্তি করতে হয়েছে হাসপাতালে।

    গত তিন সপ্তাহের মধ্যে ফুলবাগান, ঢাকুরিয়া, সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি হয়েছে কিছু শিশু।

    এমনকী সদ্যোজাতও। এর প্রায় ১০ গুণ শিশু কোভিড পজ়িটিভ হয়ে বাড়িতেই থাকছে। সেরেও উঠছে বলে দাবি স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম দাসের কথায়, ‘করোনার এই পর্বে ছোটদের সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা তুলনায় বেশি।

    ২০২২-এ নভেল করোনাভাইরাসের ওমিক্রন প্রজাতি আত্মপ্রকাশ করার পর থেকেই ধীরে ধীরে ছোটদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণের নজির দেখা গিয়েছে।’ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রবণতা ক্রমেই বেড়েছে বলেই জানাচ্ছেন অরিন্দম।

    বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের যে প্রজাতি বা উপপ্রজাতি সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী, সেটি আদতে ওমিক্রনের জেএন.১ উপপ্রজাতি এবং তার পরবর্তী প্রজন্ম এলএফ.৭, এনবি.১.৮.১ এবং এক্সএফজি।

    তাই ছোটদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কারণ ওমিক্রনের উপপ্রজাতি এবং তার পরবর্তী প্রজন্মের ভাইরাসে স্পাইক প্রোটিনে জিন মিউটেশনের ফলে এমন পরিবর্তন হয়েছে, যার জেরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটানোর এবং ইমিউনিটিকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। তাই ছোটরাও নিস্তার পাচ্ছে না।

    শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ পায়েল চৌধুরীর মতে, ‘মানুষের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ইমিউনিটিকে সহজেই ফাঁকি দিচ্ছে ভাইরাস। সে জন্যই এখন অতি সংক্রামক এই ভাইরাস। তবে ছোটরা সংক্রমিত হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যাচ্ছে।’

    বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সন্তানের দু’দিনের বেশি জ্বর, মারাত্মক বমি-ডায়ারিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক মনে করলে করোনা টেস্টের কথা বলবেন।

  • Link to this news (এই সময়)