পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব! রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের নিশানায় জেলা সভাপতি, তুললেন যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
আনন্দবাজার | ১৭ জুন ২০২৫
প্রকাশ্যে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাশন। নিজের ফেসবুক লাইভে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। তবে কিছু ক্ষণ পরেই সেই লাইভ তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে মুছে দেওয়া হয়। যদিও তত ক্ষণে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক লাইভ ভাইরাল (এই ভাইরাল ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম) হয়ে যায়। ভাইরাল ভিডিয়োতে শিবদাশন দাবি করেছেন, বিজেপির সঙ্গে ‘হাত’ মিলিয়ে চলছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি! শুধু তা-ই নয়, তাঁর যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
শিবদাশন তাঁর ফেসবুক লাইভে দাবি করেছেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে জেলা সভাপতি। দলের সর্বনাশ ডেকে নিয়ে আনছেন তিনি। এমনকি ২০২১ সালের ভোটে বিজেপির টিকিট পেতে তলে তলে পদ্ম শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ভি শিবদাসন। পাশাপাশি, তিনি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ককে অহংকারী, স্বার্থপর বলে তোপ দেগেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন জেলা সভাপতি হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে।
২০২২ সালে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা থেকে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা এক লক্ষ ভোটে লিড পেয়েছিলেন। কিন্তু দু’বছর পর ২০২৪ সালের লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী লিড পান ৪০ হাজার ভোটে। শিবদাশনের প্রশ্ন, কী ভাবে ৬০ হাদার ভোট কমে গেল? ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোটে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের ফলাফল কী হবে, তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই প্রবীণ নেতা।
শিবদাশন অর্থাৎ দাশু দলের প্রবীণ নেতা। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসেন তিনি। প্রথম থেকেই তিনি মমতাপন্থী। দাশু শুধু তৃণমলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নন, জেলা পরিষদের মেন্টারপদেও রয়েছেন। জেলার এত বড় নেতা প্রকাশ্যে জেলা সভাপতিকে এ ভাবে তোপ দাগায় শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রকাশ্যে চলে এসেছে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলও। এই ঘটনা নিয়ে নরেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দাসুদা আমার দলের সিনিয়র নেতা। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’’ যদিও এই নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কিছুটা সত্যি কথা উনি (শিবদাশন) বলেছেন। অত্যাচার তো করছে মানুষের উপর। ২০২১-এ (নরেন্দ্রনাথ) বিজেপিতে আসতে চেয়েছিলেন কি না আমি জানিনা। কিন্তু এখন আসতে চাইছেন। কিন্তু আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই ধরনের দেশদ্রোহী, অত্যাচারী এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের দলে কোনও জায়গা দেওয়া হবে না।’’