বাংলাদেশি সন্দেহে দেশছাড়া করা হয়! রাজ্যের আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হল দেশে
আনন্দবাজার | ১৭ জুন ২০২৫
বাংলাদেশি সন্দেহে দেশছা়ড়া হওয়া আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হল রাজ্যে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা ফজের মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী তসলিমা মণ্ডলও কাজের খোঁজে মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাংলাদেশি সন্দেহ পাকড়াও করে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহযোগিতা এবং রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের উদ্যোগে ফিরিয়ে আনা হয় ওই ফজের এবং তসলিমাকে।
সোমবার রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম সমাজমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, বিএসএফের মাধ্যমে রাজ্যের পাঁচ জন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহ সে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, রাজ্যের পুলিশ এবং পরিযায়ী শ্রমিক পর্ষদকে কিছু না জানিয়েই এই পদক্ষেপ করা হয়। তাঁদের মধ্যে মুর্শিদাবাদের নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, বেলডাঙার মিনারুল শেখ এবং পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের মোস্তাফা কামালকে ইতিমধ্যে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এ বার আরও দু’জনকে ফেরানো হল পশ্চিমবঙ্গে। মঙ্গলবার সকালে সামিরুল জানান, ফজের এবং তসলিমাকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্যও বিএসএফকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। অবশেষে বিএসএফ ও বিজিবির ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে দু’জনকে উত্তর দিনাজপুরের বিন্দোলের কয়লাডাঙ্গি সীমান্ত দিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁদের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। এই বিষয়ে সামিরুল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য ছাড়া আমরা এই কাজে সফল হতে পারতাম না।”
এই নিয়ে গত দু’দিনে রাজ্যের পাঁচ জন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হল। এদের প্রত্যেককেই বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে মহারাষ্ট্র পুলিশ এবং পরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সামিরুলই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে বিষয়টি এনেছিলেন। তার পরে মহারাষ্ট্র পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সরব হন মমতা।
শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে। বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লজ্জা করে না আপনাদের! আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং অন্য পরিচয়পত্র থাকার পরেও শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার এই কাজ করেছে। আমি তাদের ধিক্কার জানাই।”