শিখ সম্প্রদায়ের এক পুলিশ কর্মীর মাথায় হাওয়াই চটির কাটআউট ছুড়ে বিপাকে সুকান্ত মজুমদার। বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনি প্যাঁচেও পড়েছেন। প্রথমে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করলেও, অবশেষে চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডলে সুকান্ত লেখেন, উত্তেজনার বশে তিনি ওই ঘটনা ঘটান।
১২ জুন বিজেপির এক প্রতিবাদ কর্মসূচির সময়ে এক শিখ পুলিশ অফিসারের উদ্দেশে হাওয়াই চটির কাটআউট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল সুকান্তর বিরুদ্ধে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। ওই ঘটনার নিন্দা করেন সকলেই। FIR হয়, সুকান্তকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলা হয়। অবশেষে মঙ্গলবার ক্ষমা চাইলেন সুকান্ত মজুমদার।
এ দিন এক্স হ্যান্ডলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার লেখেন, ‘উত্তেজনার মুহূর্তে, পুলিশের উদ্দেশে ছোড়া একটি প্ল্যাকার্ড দুর্ঘটনাবশত আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক শিখ ধর্মাবলম্বী সিআইএসএফ কর্মীর পবিত্র পাগড়ির উপর পড়ে। এই অনিচ্ছাকৃত ঘটনায় যদি কোনও শিখ ভাই বা বোনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগে থাকে, তবে আমি বিনম্রভাবে তাঁদের কাছে আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
একই সঙ্গে সুকান্ত লেখেন, সে দিন কী ঘটেছিল। তাঁর দাবি, ১২ জুন, কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর বাসভবনের সামনে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সময়, কলকাতা পুলিশ তাঁকে জোর করে প্রিজ়ন ভ্যানে তোলে। সেই সময়েই উত্তেজনার বশে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন। সুকান্ত লেখেন, তিনি এবং তাঁর দলের প্রতিটি সদস্য ‘ধর্মীয় বিশ্বাস, পবিত্র পাগড়ির মর্যাদা এবং তাঁদের গৌরবময় ঐতিহ্যের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল’।
যদিও ১২ তারিখের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ফুঁসে ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুদ্বার। আসানসোল-সহ বিভিন্ন জেলার গুরুদ্বারের পক্ষ থেকে সুকান্তর বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়। সুকান্তকে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও তোলা হয়।
যদিও প্রথমে সুকান্ত বলেছিলেন, পুরোটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত। এক পুলিশ অফিসার নাকি তাঁকে ঠেলে দেন। তাই সেই কাটআউট পড়ে যায়। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য ছিল, যাঁর গায়ে লেগেছে, সেই শিখ পুলিশ কর্তা কোনও অভিযোগ করেননি। তবে সুকান্তর সেই দাবি ধোপে টেকেনি। কারণ, শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এই পাগড়ি বা দস্তার অত্যন্ত পবিত্র। তাঁদের আধ্যাত্মিকতা, শৃঙ্খলা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক এই দস্তার। এই ঘটনায় তার অবমাননা হয়েছে বলেই অভিযোগ তোলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ।