• দিল্লি পুলিশের পোশাকেই কি ATM লুট আসলুপের
    এই সময় | ১৭ জুন ২০২৫
  • অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি

    ময়নাগুড়ি-লাটাগুড়িগামী জাতীয় সড়কের বোলবাড়ি বাজারের এটিএম লুটের ঘটনার ৬০ ঘণ্টা পেরোলেও এখনও অধরা ২ দুষ্কৃতী। ফলে দিন রাত এক করে বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের আওতাধীন বনাঞ্চলে সোমবারও তল্লাশি চালাচ্ছেন পুলিশ ও বনকর্মীরা।

    বন্যপ্রাণীর ভয় উপেক্ষা করেই জঙ্গলের সুদীর্ঘ চড়াই-উতরাই পথ বেয়ে চলছে তল্লাশি অভিযান। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বনবস্তি-সহ চা বাগানের বাসিন্দাদেরও। গ্রেপ্তার হওয়া তিন দুষ্কৃতীকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই এটিএম লুট করা তাঁদের মূল পেশা।

    এই দলের মাথা হরিয়ানার বাসিন্দা আসলুপ খান আগে দিল্লি পুলিশে চাকরি করতেন। কয়েক বছর আগে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। তার পরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তিনি। দিল্লি পুলিশের পোশাক ও টুপি পরে নানা অপরাধ করতেন বলে অভিযোগ।

    এটিএম লুটে ব্যবহার করা সাদা গাড়ি থেকে দিল্লি পুলিশের টুপিও উদ্ধার হয়েছে। সঙ্গে মিলেছে বিভিন্ন রাজ্যের ভুয়ো নম্বর প্লেট। পুলিশের অনুমান, যখন যে রাজ্যে তাঁরা ‘অপারেশনে’ যেতেন, সন্দেহ এড়াতে সেখানকার গাড়ির নম্বর ব্যবহার করতেন।

    জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘বিহার ও হরিয়ানা থেকে এই দলটি নানা কর্মকাণ্ড করে বেড়াত। এই দলের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন যুক্ত আছে। এর আগে রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়িতে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। কিছুদিনের জন্য গা-ঢাকা দিয়ে ফের নতুন করে কর্মকাণ্ড চালায়।’

    শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির একটি রিসর্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন পাঁচ জন। গভীর রাতে কিয়স্কে ঢুকে সাত মিনিটের মধ্যে গ্যাস কাটারের সাহায্যে এটিএম কেটে টাকা ভর্তি ট্রে লুট করেন তাঁরা।

    সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার সময়ে জলপাইগুড়ি এক বাসিন্দা পুলিশকে সঠিক সময়ে অভিযুক্তের গাড়ির নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন।

    সরস্বতীপুর চা-বাগানের মানুষজনও পুলিশকে এই অভিযানে সাহায্য করেছেন। সকলকে পুরস্কৃত করবে পুলিশ। শাল, টিক, চিলোনি, বহেরার পাশাপাশি লতাগুল্ম ও ঝোপঝাড়ে ঘেরা বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের বনাঞ্চলে লেপার্ড, বাইসন ছাড়াও প্রচুর হাতি রয়েছে।

    তবে জঙ্গলের মাঝে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ, দলছুট হাতির মুখোমুখি পড়ে যাওয়া। কয়েক মাসে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের কাছে হাতির আক্রমণে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই দুষ্কৃতীদের খোঁজে জঙ্গলে তল্লাশিতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশের পাশাপাশি বনকর্মীদেরও।

    দুষ্কৃতীদের খুঁজতে ড্রোন ক্যামেরা ও নাইট ভিশন ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। গজলডোবা সংলগ্ন সরস্বতী পুর চা বাগানের কাছেই রয়েছে তিস্তা নদী। অন্য পাড়ে বিস্তৃত জঙ্গল। উভয় প্রান্ত জুড়েই নজরদারি চলছে।

  • Link to this news (এই সময়)