ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল-পথে বিনপুরে ঢুকছে গাঁজা ও হেরোইন, বিক্রি ছোট দোকানে
বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: বিনপুর-১ ব্লকের মাগুরা, ভুরসা, ভেটলি এখন মাদক দ্রব্যের মিনি বাজার। ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল পথে হেরোইন, গাঁজা এলাকায় ঢুকছে। জঙ্গল পাতা, পাউডারের জন্য দোকানে ভিড় জমছে। তরুণ থেকে প্রৌঢ়, বৃদ্ধ—নিষিদ্ধ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন সকলেই। স্থানীয়দের মধ্যে বাড়ছে চাপা ক্ষোভ। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা লাগোয়া বিনপুর। ১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গভীর জঙ্গল। সন্ধ্যা নামলেই জঙ্গলের হাঁটা পথে অচেনা মানুষজনের। আনাগোনা। স্থানীয় লিঙ্কম্যানদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে গাঁজা ও হেরোইন ভর্তি থলে। এলাকার ছোট ছোট দোকানে সহজে পৌঁছে যাচ্ছে গাঁজা ও হেরোইন। এসব মাদকদ্রব্য পাচারে শিলদা, ফুলকুসমা, রায়পুর, দহিজুড়ি করিডোর হয়ে উঠেছে। এই পথটি আসলে লালগড় যাওয়ার। ঝাড়গ্রামের দক্ষিণে রাজ্য ও জাতীয় সড়কে মাদক পাচার রুখতে পুলিসের লাগাতার অভিযান চলছে। পাচারকারীরা ধরাও পড়েছে। বিকল্প পথ হিসেবে বেলপাহাড়ীর জঙ্গল পথকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। মাদক পাচারকারীদের সক্রিয়তা হটাৎ করে এই এলাকায় বেড়ে গিয়েছে। বিনপুরের মাগুরা , ভুরসা ভেটলি এলাকায় গাঁজা ও হেরোইন বিক্রির মিনি বাজার হয়ে উঠছে। স্থানীয় স্তরে নেশাজাত দু’টি দ্রব্যের নাম জঙ্গল পাতা ও পাউডার। পান সিগারেটের গুমটি ও ছোট ছোট দোকানগুলোতে গাঁজা ও হেরোইন বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের মুখে এক শ্রেণির যুবকদের এলাকায় দেদার টাকা উড়ানোর কথাও শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় গ্ৰামবাসীদের অভিযোগ, ইদাণীং স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা দোকানের সামনে ঘোরাফেরা করছে। বাইরের যুবকদের আনাগোনাও হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। মানুষজন মাদকের রমরমা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। মাগুরা, ভুরসা, ভেটলির মতো গ্ৰামীন এলাকায় মাদকের বাজার কাদের মদতে চলছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বেলপাহাড়ী বগডুবা এলাকার এক আদিবাসী যুবক বলেন, ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল পথ দিয়ে অচেনা কিছু মানুষজন এলাকায় নিয়মিত আসছেন। যাদের গতিবিধি যথেষ্ট সন্দেহজনক। অপরিচিত লোকদের হাতে থলি তুলে দিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। জঙ্গলের পথে এদের চলাফেরার কারণ জানা নেই।
বিনপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, সবাই জানে এখানে মাদক দ্রব্যের কারবার চলছে। অল্প বয়সী যুবক ও ছোট দোকানদাররা এই কারবারে যুক্ত। পান-গুটখা ও ছোট দোকানে গাঁজা, হেরোইন দেদার বিক্রি হচ্ছে। সব বয়সের মানুষ দোকানগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন। নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ার খবর পাচ্ছি। ভদ্র পরিবারের সন্তানরাও নেশার কবলে পড়ছে। স্থানীয়দের যোগ না থাকলে মাদকের এমন কারবার চালানো সম্ভব হতো না। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিসের এক কর্তাকে ঝাড়খণ্ড থেকে গাঁজা ও হেরোইন পাচার ও বিনপুরের গ্ৰামীণ এলাকায় মাদক দ্রব্যের বাজার গড়ে ওঠা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রতীকী চিত্র